গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। তিনি গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাত ১টা ৩২ মিনিটের দিকে গাজীপুর জেলা পরিষদ ভবনের বঙ্গতাজ মিলনায়তনে নির্বাচনের ‘ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র’ থেকে এই ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম।

গাজীপুর নগরের নবনির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুন দেশের বহু কোটি সাধারণ মায়ের মতই একজন জননী। নির্বাচনে তাঁর একমাত্র পরিচয় ছিল গাজীপুর নগরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের মা। সেই পরিচয়েই তিনি গাজীপুর নগরের মেয়র নির্বাচিত হলেন। পরাজিত করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজমত উল্লা খানকে।

অত্যন্ত সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বৃহস্পতিবার গাজীপুর নগর নির্বাচন হয়। মোট ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন ভোটারের এই নির্বাচনে ৪৮ দশমিক ৭৫ শতংশ ভোট পড়েছে। গোটা ভোট ইভিএম-এ হলেও মেয়র পদে নির্বাচনী চুড়ান্ত ফল পেতে রাত দেড়টা পর্যন্ত সময় লেগেছে।

৬১ বছর বয়সী নবনির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুন ফল ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন না। ছিলেন তাঁর সন্তান জাহাঙ্গীর আলম। ১৬ হাজারের বেশি ভোটে মায়ের বিজয়ের পর জাহাঙ্গীরই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেন সাংবাদিকদেরকে। আওয়ামী লীগ তাঁকে প্রার্থী না করলেও, নিজের মা’কে প্রার্থী করায় আওয়ামী লীগ তাঁকে বহিস্কার করলেও ফল ঘোষণার পর বলেছেন আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকার বিজয় হয়েছে, তবে তাঁর মায়ের মার্কা ছিল টেবিল ঘড়ি।

ফলাফল ঘোষণার পর বিজয়ী মেয়র জায়েদা খাতুনের ছেলে জাহাঙ্গীরের সমর্থকরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। তাদের স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে রাতের গাজীপুর নগর। তবে পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা ছিলেন না ফল ঘোষণার আনুষ্ঠানিক আয়োজনে, ছিলেন নিভৃতে, নিজের বাসায়।

৩২৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজীপুর সিটির তৃতীয় নির্বাচনে ৫৭টি ওয়ার্ডে রয়েছে ৪৮০টি ভোটকেন্দ্র। সব কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়। এসব কেন্দ্রে লাগানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা।

নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন, নারী ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ১৮ জন। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে।