সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫শে মে) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে একটানা চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
গাজীপুর সিটির ভোট সকাল আটটায় শুরু হলেও তার আগে থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রে দেখা যায় ভোটারদের দীর্ঘ সারি, সেই পুরনো চেহারায় ভোটকেন্দ্রগুলো। নারী-পুরুষ, বিভিন্ন বয়সী ভোটারদের সরব উপস্থিতি। তাতে দিনের শুরুতেই নগরে ভোটের উৎসবমুখরতা দেখা যায়।
সকাল নয়টায় টঙ্গীর দারুস সালাম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান। পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি
সকাল দশটায় নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন স্বতন্ত্র ও এই নির্বাচনের আলোচিত মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। এই নগরের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা কেন্দ্র ঘুরে দেখেন।
এদিন ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমান টঙ্গীর সিরাজুদ্দীন সরকার বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে এবং আরেক স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী শাহনূর সরকার রনি আহসান উলাহ মাস্টার হাসপাতাল কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন।
জাতীয় নির্বাচনের ক’মাস আগে এই সিটি নির্বাচন হওয়ায় সবার নজর গাজীপুরে। নগরীর বিভিন্ন কেন্দ্রে ঘুরে ভোটারদের মধ্যেও বাড়তি আগ্রহ দেখা যায়। বিভিন্ন বয়সের মানুষদের দেখা যায় দীর্ঘ লাইনে। ভোট দিতে পেরে খুশি ভোটাররা। কোথাও কোনো সহিংসতার খবরও পাওয়া যায়নি।
তবে ইভিএমে ভোট হওয়ায় কোথাও কোথাও সাময়িক সমস্যা হয়েছে। ভোটগ্রহণে ধীরগতি হলেও কোনো কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বাতিল হয়নি। নির্বাচনী কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, যেসব কেন্দ্রে প্রবীণ ভোটারের সংখ্যা বেশি, সেখানে ভোট দিতে দেরি হচ্ছিল। কারণ, কাউকে কাউকে বেশ কয়েকবার দেখিয়ে দিতে হয় ভোটদান প্রক্রিয়া।
এদিকে, সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত ছিল পুরো সিটির ভোট। যা পর্যবেক্ষণ করা হয় রাজধানীর নির্বাচন কমিশন থেকে। এসময় পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ায় নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময় গোপন বুথে প্রবেশের দায়ে দুজনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া কোনো অনিয়মের তথ্য পায়নি নির্বাচন কমিশন।
এবারের নির্বাচনে ভোটার ছিল ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এদের মধ্যে পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ ও পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন রয়েছে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার।
নির্বাচনে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৪৮০টি ভোট কেন্দ্রের ৩ হাজার ৪৯৭টি কক্ষে ভোট গ্রহণ কার্যক্রম চলে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ছিল সিসি ক্যামেরা। এগুলো ঢাকা থেকে মনিটরিং করা হয়। মোট ৪ হাজার ৪৩৫টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা হয়।
নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৮ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনী নিরাপত্তায় ১৩ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করেছে। এছাড়া ১৯ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটকেন্দ্রে সজাগ ছিল। নির্বাচনে ১০ হাজার ৯৭১ জন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন।