বৈশ্বিক মন্দার এই সময়ে গ্যাস বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে এই খাতে সরকারকে ভর্তুকি দেয়ার দাবী জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে জ্বালানির দাম বাড়ানো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে বলে মনে করেন তারা। আপাততঃ দাম বাড়ানো স্থগিত রাখার দাবী জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই সম্মেলন কক্ষে, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর আজ শনিবার (২১শে মে) সকালে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের আরো কয়েকটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, বিশ্বজুড়ে অথনৈতিক মন্দার মধ্যে দেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে ব্যবসা ও শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। ফলে উৎপাদন ও রপ্তানি খাতের প্রতিযোগিতা ধরে রাখা সম্ভব হবে না। জীবনযাত্রার ব্যয়ও বাড়বে।

এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা যদি ১৩ টাকার গ্যাসকে ২৮ টাকা করে দেই, তাহলে গ্যাস হয়তো থাকবে। তবে ইন্ডাস্ট্রি থাকবে না। দাম বাড়ালে উৎপাদন খরচও বাড়ানো হবে, এতে আমরা দুর্বল পরিস্থিতির শিকার হব। আমাদের ব্যবসায়ের ব্যয় ও উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে।

এ সময় বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি মো. হাতেম বলেন, যে হারে দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, তাহলে আর চেষ্টা করার কোনো সুযোগ থাকবে না। এতে বিদ্যুৎ লাইনও কাটবে এবং গ্যাস লাইনও কাটবে। ইন্ডাস্ট্রি এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে।

সম্মেলনে ব্যবসায়ী সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন তিতাসের আয়-ব্যয়ের হিসাব তুলে ধরে বলেন, কোনোভাবেই গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, পেট্রোবাংলা তিতাসের কাছে গ্যাস বিক্রি করে টাকা খাচ্ছে। আবার তিতাস তিন বছরের নিট মুনাফা নিয়ে গেছে। যার পরিমাণ ৫৪৯ কোটি টাকা। তিন বছরে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা যেটি এনবিআর সমন্বয় করেনি তিতাস থেকে। ইতোমধ্যে তাদের কাছে গ্রাহকের ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যাংক ডিপোজিট রয়েছে।

গ্যাস-বিদ্যুৎতের দাম বাড়ানোর চেয়ে অপচয় রোধ করার ওপর জোর দেন ব্যবসায়ীরা। অর্থনীতির এমন অবস্থায় দাম সমন্বয় করতে আমলাতান্ত্রিক নয়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত চান ব্যবসায়ীরা।