চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার বাঘ দম্পতি রাজ-পরীর সংসারে জন্ম নিয়েছে ৪টি সাদা বাঘ শাবক। এ দম্পতির ঘরেই বাংলাদেশের প্রথম সাদা বাঘটির জন্ম হয়েছিল। রাজ-পরীর সংসারে নতুন চার অতিথির আগমন সাড়া ফেলেছে। শনিবার (৩০শে জুলাই) বিকেলে পরী চারটি বাচ্চা প্রসব করে। চিড়িয়াখানায় এ নিয়ে বাঘের সংখ্যা দাঁড়াল ১৬টি।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন জানান, প্রতিটি বাঘ শাবকের ওজন প্রায় ৮০০-৯০০ গ্রাম। মায়ের সঙ্গে খাঁচায় আছে শাবকগুলো। মায়ের দুধই পান করছে। ৭ দিন পর শাবকগুলোর লিঙ্গ পরিচয় জানা যাবে।
পৃথিবীতে ‘হোয়াইট টাইগার’ বিরল। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় একটি সাদা বাঘ ছিল। এখন এই ৪ শাবকসহ সাদা বাঘের সংখ্যা ৫-এ দাঁড়িয়েছে।
চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, একসময় চার বছর বাঘশূন্য থাকা চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে দরপত্রের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার প্রজাতির বাঘ-বাঘিনী আমদানি করা হয়। বাঘগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম ‘প্যানথার টাইগ্রিস টাইগ্রিস’। এর মধ্যে বাঘটির বয়স ১১ মাস, বাঘিনীর বয়স ৯ মাস। দুটি কাঠের বাক্সসহ বাঘ দুটির ওজন ছিল ৪২০ কেজি। এগুলোর গড় আয়ু ১৪-১৫ বছর। তবে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ভীম নামের একটি বাঘ ২৩ বছর বেঁচেছিল। বাঘগুলো চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া বাবদ ৩৩ লাখ টাকা খরচ হয়।
১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ২০০৩ সালে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে দুটি বাঘ আনা হয়েছিল। ২০০৬ সালে বাঘ ‘চন্দ্র’ মারা যায়। ২০০৯ সালে তার সঙ্গী ‘পূর্ণিমার’ ক্যান্সার ধরা পড়ে। ২০১২ সালের ৩০ অক্টোবর পূর্ণিমা মারা যায়। এরপর বাঘশূন্য ছিল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। এখন আমদানি করা বাঘের বংশবৃদ্ধি হওয়ায় দেশের বিভিন্ন চিড়িয়াখানা ও সাফারি পার্কের সঙ্গে পশুর বিনিময়ে বাঘ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে জলহস্তী, জিরাফ ইত্যাদি আনতে চায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বর্তমানে শতাধিক প্রজাতির অর্ধসহস্রাধিক পশু ও পাখি আছে। পশুর মধ্যে আছে সিংহ, পুরুষ ভাল্লুক, কুমির, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, উল্টোলেজি বানর, উল্লুক, হনুমান, গয়াল, সজারু, শেয়াল, মেছোবাঘ, গন্ধগোকুল, জেব্রা ইত্যাদি রয়েছে। রয়েছে ময়ূর, উটপাখি, ইমু, তিতির, টিয়া, চিল, শকুন, টার্কি, পায়রাসহ একটি পক্ষীশালা এবং প্রচুর অজগর সাপ।