চট্টগ্রাম বন্দরের শুল্ক ও সেবা খাতে সম্প্রতি ঘোষিত শুল্ক বৃদ্ধি ব্যবসায়ীদের জোরালো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এক মাসের জন্য স্থগিত করেছে সরকার। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ‘কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট ম্যানেজমেন্ট: প্রবলেমস, প্রসপেক্টস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ ঘোষণা দেন নৌপরিবহন বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি এবং বে-টার্মিনালসহ চলমান প্রকল্পগুলো বন্দরের চার্জ বাড়াতে বাধ্য করেছে। তবে সাময়িক স্থগিতাদেশ রপ্তানিকারকদের ওপর চাপ কিছুটা কমাবে।

নৌ উপদেষ্টা বলেন, কেউ কেউ বলছেন, বন্দর দিয়ে দেবে। বন্দর কাকে দেবে আমরা? অপারেটর নিয়োগ দেব। দুনিয়াতে অনেক বড় বড় অপারেটর আছে। যারা ১৩০, ১৪০, ১৮০ বন্দর অপারেট করে।

নতুন শুল্ক কাঠামোতে বন্দর ও বেসরকারি কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) সেবার চার্জ গড়ে ৪০–৪৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। রপ্তানিকারকরা অভিযোগ করেন, আইসিডিগুলো সেবার মান বা সক্ষমতা না বাড়িয়েই চার্জ বাড়িয়েছে। একইসঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাননিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার সমালোচনাও করেন তারা।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বন্দরটি নকশা অনুযায়ী ধারণক্ষমতার বাইরে পরিচালিত হচ্ছে। এটি এখনও জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীল এবং সীমিত গভীরতার কারণে এখনও বৈশ্বিক মানের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।’

তিনি দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা কনটেইনার দ্রুত খালাস, কাস্টমস স্বয়ংক্রিয়করণ এবং আগামী পাঁচ বছরের সম্ভাব্য বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি সামলাতে আইন সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান জানান, বন্দরে আটকে থাকা সব নিলামযোগ্য কনটেইনার এই মাসেই তালিকাভুক্ত করে দ্রুত নিলাম করা হবে। তিনি আরও জানান, সাবেক এমপিদের ফেলে রাখা ৩০টি গাড়ি সরকারি পরিবহন পুলে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কর্মশালায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, লজিস্টিকস পারফরম্যান্স, বাণিজ্য ব্যয় এবং কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স দক্ষতার দিক থেকে চট্টগ্রাম বন্দর এখনও বিশ্বের শীর্ষ বন্দরের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে।