শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের ১৬ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদের এক কর্মীকে।
গতকাল (সোমবার) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির অনলাইন সভায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর আজ (মঙ্গলবার) রাত দেড়টার দিকে প্রকাশ করা হয় বহিষ্কার আদেশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চবি প্রক্টর ও বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য সচিব রবিউল হাসান ভূঁইয়া জানান, সংঘর্ষ ও মারধরের প্রতিটি ঘটনা যাচাই করে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জড়িত অনেকে ক্ষমা চেয়েছেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যকলাপে জড়াবেন না মর্মে কথা দিয়েছেন। তাদের কয়েকজনকে সতর্ক করে ক্ষমা করা হয়েছে।
যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে
চবি ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তাসফিয়া জাসারাত নোলককে দেড় বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। গত বছরের ১১ই আগস্ট খালেদা জিয়া হলে ছাত্রীদের মধ্যে হাতাহাতি এবং মারধরের ঘটনায় তাকে বহিষ্কার করা হয়।
গত বছরের ২৬শে সেপ্টেম্বর সাংবাদিককে শারীরিক ও মানসিক হেনস্তার ঘটনায় লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আরশিল আজিম নিলয় ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শোয়েব মোহাম্মদ আতিককে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
গত বছরের ৮ই অক্টোবর আলাওল হলের প্রভোস্ট কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনায় এক বছরের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন হাসান মাহমুদ। তিনি সমাজতত্ত¡ বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। একই ঘটনায় ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলামকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এছাড়া গত বছরের দোসরা ডিসেম্বর এ এফ রহমান হলে দেশীয় অস্ত্রসহ কয়েক দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া, রুম ভাঙচুর এবং সাংবাদিকদের হুমকির ঘটনায় ছয়জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
তারা হলেন সংস্কৃত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের অনিক দাস, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অয়ন কান্তি সরকার, একই শিক্ষাবর্ষের অর্থনীতি বিভাগের লাবিব সাঈদ ফাইয়াজ, ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সিফাতুল ইসলাম, একই বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মো. মোবারক হোসেন ও একই সেশনের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের নাহিদুল ইসলাম।
অন্যদিকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আরও ছয়জনকে এক বছরের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তারা হলেন, ফাইন্যান্স বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আমিরুল হক চৌধুরী, বাংলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাখাওয়াত হোসেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মাহমুদুল হাসান ইলিয়াস, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ ফাহিম, ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মো. ইকরামূল হক, দর্শন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের নয়ন দেবনাথ।
অন্যদিকে শাটল ট্রেনে নাশকতার পরিকল্পনা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্টের দায়ে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মো. জোবায়ের হোসেনকে দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী।