সাবেক নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ও লেখক মাহবুব তালুকদার মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১টায় তিনি মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে আইরিন মাহবুব। মৃতু্যকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

তার মেয়ে আইরিন মাহবুব গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বুধবার বেলা ১২টার দিকে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, তিনি ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর দুপুর ১টার দিকে তিনি মারা যান। মাহবুব তালুকদার দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন।

মাহবুব তালুকদার ১৯৪২ সালের ১৩ ফেব্র“য়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলায়। তিনি ঢাকা নবাবপুর হাইস্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীকালে তিনি ঢাকা জগন্নাথ কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর স্থাপত্য বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করেন।

মাহবুব তালুকদার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ও মুজিবনগর সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের চাকরিতে যোগ দেন। এ সময় তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তাকে উপসচিবের পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির স্পেশাল অফিসার নিযুক্ত করেন। রাষ্ট্রপতি মুহম্মদুল্লাহর সময়ে তিনি তাঁর জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর জনাব তালুকদার তাঁর সহকারী প্রেস সচিব (উপসচিব) এর দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তাঁকে তদানীন্তন ক্যাডার সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা পরবর্তীকালে বিসিএস প্রশাসন হিসেবে রূপান্তরিত হয়। তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। চাকরি জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ে অতিরিক্ত সচিবের পদে কর্মরত ছিলেন।

মাহবুব তালুকদার একজন বিশিষ্ট সৃজনশীল লেখক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ভ্রমণকাহিনি মিলিয়ে তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা চলি­শ। তিনি ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর স্ত্রীর নাম নীলুফার বেগম। এই দম্পতির দুই কন্যা ও এক পুত্রসন্তান রয়েছে।