কয়েক দফা চেষ্টার পর ভারতের কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার সমাধান খুঁজতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সাথে বৈঠক করেছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় বৈঠক শুরু হয়, চলে রাত ১২টা পর্যন্ত।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মমতা জানান, তাদের ৫টির দাবির মধ্যে অধিকাংশই মেনে হয়েছে। এখন রোগীদের কথা বিবেচনা করে কাজে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

যে দাবিগুলো মানা হয়েছে- কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত কুমার গোয়েলকে সারানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা, বদলি করা হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্যশিক্ষা কর্মকর্তাতাকেও, কলকাতা পুলিশে ঢালাও রদবদল আনার প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন।

বৈঠক শেষে মমতা বললেন, চিকিৎসকদের দাবি মেনে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে মঙ্গলবারই সরানো হচ্ছে বিনীত গোয়েলকে। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকদের দাবি মেনে নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তাকেও অপসারণ করা হচ্ছে। তিন জনকেই অন্য পদে দায়িত্ব দেওয়া হবে।  মমতা জানান, আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের অধিকাংশ দাবিই তারা মেনে নিয়েছেন। এ বার আশা করছেন, আন্দোলনকারীরা কাজে ফিরবেন। মমতার কথায়, ৯৯ শতাংশ দাবি মেনে নিয়েছি। আর কী করব!

তিনি জানান, জুনিয়র ডাক্তারদের পাঁচটি দাবির প্রথমটি সিবিআই এবং আদালতের বিষয়। বাকি চারটির মধ্যে তিনটিতে সায় দিয়েছে তার সরকার। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে বিনীত গোয়েলকে সরানো হবে। পাশাপাশি, চিকিৎসকদের দাবি মেনে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অভিষেক গুপ্তকেও সরানো হচ্ছে। সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কৌস্তভ নায়েক, স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশিস হালদারকেও।

মমতা বলেন, আমরা কাউকে অশ্রদ্ধা, অসম্মান করিনি। কিন্তু ওদের বিরুদ্ধে যেহেতু চিকিৎসকদের ক্ষোভ আছে, বলেছেন, ওদের ওপর আস্থা নেই, তাই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি এ-ও জানান, চিকিৎসকদের দাবি মতো কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে সরকার। তিনি বলেন, প্রায় ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বৈঠক হয়েছে। ওদের পক্ষ থেকে ৪২ জন সই করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে সই করেছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। আমরা অভিনন্দন জানিয়েছি চিকিৎসকদের। আমরা খুশি যে, তারাও খুশি। ওরা বক্তব্য রাখতে চেয়েছিলেন। সেই সুযোগ দিয়েছি। আমরাও আমাদের বক্তব্য রেখেছি।