লাদাখে সংঘর্ষের পর অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তের ওপারে চীনা সেনার সমাবেশ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতীয় সেনারা।

চীনা আগ্রাসন রুখতে তৎপর হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীও। যার অন্যতম দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক মুসলিম নারী সেনা অফিসারকে। তিনি সারিয়া আব্বাসি (২৮)।

নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে চীনা চালকহীন সশস্ত্র বিমান ও হেলিকপ্টার যাতে ভারতে ঢুকতে না পারে, এ জন্য অত্যাধুনিক ‘এল-৭০’ বিমানবিধ্বংসী কামান নিয়ে কড়া পাহারা দিয়ে চলেছেন সারিয়া।

ভারতের উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে জন্ম সারিয়া আব্বাসি। গোরক্ষপুরের রামজানকী নগরের বাসিন্দা সারিয়ার পরিবারে অনেকেই সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।

ছোটবেলা থেকে সেনাবাহিনীতে কাজ করা আত্মীয়দের বীরত্বের কথা শুনেই বড় হয়েছেন তিনি। এখন নিজে সেই বীরগাথার শরিক।

সারিয়ার মা-বাবা অবশ্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত নন। তার বাবা তেহসিন আব্বাসি আকাশবাণী গোরক্ষপুরের প্রোগ্রাম হেড। মা রেহানা হাইস্কুলের শিক্ষিকা।

ছোট ভাই তামসিল আহমেদ দিল্লিতে স্নাতকস্তরে পড়াশোনা করছেন। সারিয়া নিজেও অত্যন্ত মেধাবী। গোরক্ষপুরের জিএন ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি স্কুল থেকে পাস করার পর আইএমএস গাজিয়াবাদ থেকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক করেছেন।

এর পরই দেশ-বিদেশের নানা সংস্থা থেকে চাকরির সুযোগ এসেছিল। কিন্তু একঘেয়ে সেই অফিস জীবন সারিয়ার বরাবরই অপছন্দের ছিল।

বরং ছোট থেকে তার স্বপ্নজুড়ে শুধু ছিল জলপাই পোশাক এবং তার বুকে লাগানো মেডেলের সারি। সেই স্বপ্নের পথে হেঁটেছেন তিনি। চাকরি ছেড়ে নিজের স্বপ্নকে সফল করেছেন।

তার কাঁধেই এখন চীন সীমান্তের আকাশ রক্ষার ভার। অরুণাচলপ্রদেশের চীন সীমান্তে ভারতীয় সেনা অফিসার হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে তাকে। গত চার বছর ধরে তিনি সেনাবাহিনীতে কর্মরত।

২০১৫ সালে কম্বাইন্ড ডিফেন্স সার্ভিসেসের ফরম জমা দিয়েছিলেন। প্রথমবার সাফল্য পাননি। পরের বছর ফের ওই পরীক্ষায় বসেন। মেয়েদের জন্য মাত্র ১২টি আসন ছিল।

কম আসন থাকায় মেয়ের সাফল্য নিয়ে সেভাবে নিশ্চিতও হতে পারেননি তার মা-বাবা। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দ্বিতীয়বারের চেষ্টাতে সফল হন সারিয়া।

২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মায়ের জন্মদিনের দিন লেফটেন্যান্ট পদে যোগ দেন তিনি। লেফটেন্যান্ট সারিয়া এখন ক্যাপ্টেন সারিয়া। অরুণাচলপ্রদেশের সীমান্তে কড়া প্রহরায় চীনের আগ্রাসনের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

সূত্র- হিন্দুস্তান টাইমস।