নারী বিশ্বকাপের ফাইনালের পর চুমু-কান্ড নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন লুইস রুবিয়ালেস। এর জেরে ফিফা কর্তৃক নিষিদ্ধও হয়েছেন তিনি। কিন্তু তাতেও পদ ছাড়তে রাজি ছিলেন না এই ক্রীড়া সংগঠক। তবে ঘরে-বাইরে ব্যাপক চাপে পড়ে অবশেষে স্প্যানিশ ফুটবল প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি। আজ সোমবার সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এসব তথ্য জানিয়েছে।

স্প্যানিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন লুইস রুবিয়ালেস। ছবি: এএফপিস্প্যানিশ 

গত ২০ আগস্ট ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে ২০২৩ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন। জয়ের আতিশয্যেই হারমোসোর ঠোঁটে চুমু দিয়ে বসেন রুবিয়ালেস। মুহূর্তে এই দৃশ্য ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমনকি দুজনের চুম্বন দৃশ্যের সংবাদটি প্রকাশ হয়েছিল স্প্যানিশ গণমাধ্যমগুলোতেও। তখন থেকেই বিতর্কের মুখে পড়েন তিনি। পদত্যাগের গুঞ্জন তখন শোনা গেলেও তিনি তখন করেননি। এরপর ধীরে ধীরে তা জটিল হতে থাকে। ফিফার থেকে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন। এমনকি হারমোসো কথার ভোল পাল্টাচ্ছিলেন বারবার। তাঁর (রুবিয়ালেস) বিরুদ্ধে হারমোসো শারীরিক নির্যাতনের মামলা করেন গত মঙ্গলবার।

এসব ঘটনায় রীতিমতো মানসিক চাপ বাড়তে থাকে রুবিয়ালেসের ওপর। এ কারণেই স্প্যানিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধানের পদ ছাড়লেন তিনি। পিয়ার্স মরগানের টিভি শোতে গতকাল রুবিয়ালেস বলেন, ‘আমি আমার দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারছি না। ফিফার থেকে নিষেধাজ্ঞার পর আমার বিরুদ্ধে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, তাতেই বুঝতে পেরেছিলাম যে আমার জায়গায় আমি ফিরতে পারব না। জেদ করে কোনো কিছু আঁকড়ে ধরে রাখলে ভালো কিছু হয় না। সেটা ফেডারেশন হোক বা স্প্যানিশ ফুটবল। একের পর এক মিথ্যাচারের ঘটনায় আমার মেয়েরা, পরিবার অনেক ভুগেছে। তবে এটাও সত্যি যে সত্য একদিন প্রকাশ হবেই।’

রুবিয়ালেসের চুমুকাণ্ডের ঘটনায় এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছিলেন নারী ফুটবলাররা। এমনকি ফুটবল ছাড়ারও ঘোষণা দিয়েছিলেন নারী ফুটবলাররা। ফুটবলারদের সংগঠন ফুটপ্রোর মাধ্যমে হারমোসো এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘ছবিতে আপনারা যা দেখছেন, সেই ব্যাপারে আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই। তিনি যে চুমু দিয়েছেন, তাতে আমার কোনো সম্মতি ছিল না। আমার কথা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে কিছুতেই তা সহ্য করব না।’ হারমোসোর বিবৃতির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন স্পেনের বিশ্বজয়ী ২৩ ফুটবলার। রুবিয়ালেস দায়িত্বে যতদিন থাকবেন, ততদিন তারা জাতীয় দলে ফিরবেন না। তাঁদের সঙ্গে আরও সাবেক ৫৮ ফুটবলারও জাতীয় দল বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন। এরপর রুবিয়ালেসের মা প্রতিবাদ অনশনে নেমেছিলেন। এমনকি স্পেনের বিশ্বজয়ী নারী ফুটবল দলের কোচ হোর্হে ভিলদাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।