কোটা সংস্কার আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামিয়ে অপেক্ষা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি একটি স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন। ছাত্রদের বলা হয়েছে- তারা যেন তাদের কথা উচ্চতর আদালতে বলে, তাহলে বিচারপতিদের বিচার করতে সুবিধা হবে। কাজেই আমি মনে করি তাদের অপেক্ষা করা উচিত। আন্দোলন থামানো উচিত।
শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে ময়মনসিংহ পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী কোটা উঠিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর বিচার বিভাগ থেকে বার্তা আসছে কোটা আবার চালু হবে। এতে সংক্ষুব্ধ হয়েছে আমাদের ছাত্ররা। তাদের দাবির পর প্রধান বিচারপতি আদালতে রায় স্থগিতের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের উচ্চ আদালতে কথা বরতে বলেছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামানো উচিত। সব দেশেই কোটা রয়েছে।
পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং ময়মনসিংহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাইমেনুর রশিদ ও ডিএমপির অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার মাহমুদা আফরোজ লাকীর যৌথ সঞ্চালনায় সুধী সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনের সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদ, ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মোহিত উর রহমান শান্ত, ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল, ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনের সংসদ সদস্য কৃষিবিদ ড. নজরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু, বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ম. হামিদ ও আব্দুর রব।
এ সময় ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট) আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক সায়েম, ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদুল হাসান সুমন, ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের সংসদ সদস্য এবিএম আনিছুজ্জামান আনিস, ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াহেদ, ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়ীয়া) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মালেক সরকার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ময়মনসিংহ পুলিশ লাইন্সে এসে জেলা পুলিশের ১১টি উন্নয়ন প্রকল্প এবং জেলা পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর উদ্বোধন করেন। এ সময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বিশাল এই কর্মযজ্ঞ সুন্দরভাবে উপস্থাপন এবং সংরক্ষণের জন্য জেলা পুলিশের প্রশংসা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
উন্নয়ন প্রকল্পগুলো হলো- ময়মনসিংহ পুলিশ লাইন্সে ষষ্ঠ তলা ভিত বিশিষ্ট পুলিশ ব্যারাক ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখীকরণ, পাগলা থানাধীন পাঁচবাগ তদন্ত কেন্দ্রের কার্যক্রম উদ্বোধন, নগরীর ২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ি ভবনের চতুর্থ তলা হতে ষষ্ঠ তলার নির্মাণ কাজ, নগরীর ১ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির তৃতীয় ও চতুর্থ তলার নির্মাণ কাজ, পাগলা থানা ভবনের দ্বিতীয় তলার আংশিক এবং তৃতীয় ও চতুর্থ তলার নির্মাণের (সিভিল, স্যানিটারি ও বৈদ্যুতিকসহ) অতিরিক্ত কাজ, পাগলা থানায় ষষ্ঠ তলা ভিতের প্রথম তলা অফিসার ইনচার্জ কোয়ার্টার এবং ষষ্ঠ তলা ভিতের তৃতীয় তলা ডরমিটরি ভবন নির্মাণ, গৌরীপুর থানা ভবনের দ্বিতীয় তলার আংশিকসহ তৃতীয় ও চতুর্থ তলার নির্মাণ কাজ, ফুলপুর থানা ভবনের দ্বিতীয় তলার আংশিকসহ তৃতীয় ও চতুর্থ তলার নির্মাণ কাজ, ফুলবাড়ীয়া থানা ভবনের দ্বিতীয় তলার আংশিকসহ তৃতীয় ও চতুর্থ তলার নির্মাণ কাজ, হালুয়াঘাট থানা ভবনের দ্বিতীয় তলার আংশিকসহ তৃতীয় ও চতুর্থ তলা এবং নান্দাইল থানা ভবনের দ্বিতীয় তলার আংশিকসহ তৃতীয় ও চতুর্থ তলার নির্মাণ কাজ।