বিএনপি নেতাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার (তারেক জিয়া) মা তো অসুস্থ, আপনারাও অনশন করছেন। ছেলে কেনো মাকে (খালেদা জিয়া) দেখতে আসে না, এটা কেমন ছেলে। শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
সমাবেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির অনশন কর্মসূচির সমালোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘আমার একটা প্রশ্ন, বিএনপি নেতাদের কাছে। আপনারা অনশন করেন। অথচ কেমন ছেলে সে (তারেক রহমান) অসুস্থ মাকে দেখতে আসে না। মা নাকি মরে মরে। আমি তো বলব, মাকে দেখতে আসুক।’
‘অনশনের আগে কী দিয়ে নাস্তা করে এসেছে? শেষে কী দিয়ে ভাত খাবে? নাটকের একটা সীমা থাকে। কয় ঘণ্টার অনশন?’-যোগ করেন সরকারপ্রধান।
সরকারপ্রধান বলেন, তার (খালেদা জিয়া) বড় বোন, ভাই, বোনের জামাই আমার সঙ্গে আর রেহানার সঙ্গে দেখা করতে গণভবনে আসেন। কান্নাকাটি করেন। আমি সরকারপ্রধান হিসেবে আমার যতটুকু ক্ষমতা তা করেছি। যদিও সে আমাকে হত্যার জন্য অনেক চেষ্টা করেছে। তার বোনের কান্নাকাটিতে আমি তাকে বাড়িতে থাকার সুযোগ করে দিয়েছি। চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিল আওয়ামী লীগ একশ বছরেও ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এমনকি আমাকেও বলেছিল, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবে না। আল্লাহর মাইর দুনিয়ার মাইর। এখন তিনি না প্রধানমন্ত্রী, না বিরোধী দলের নেত্রী। কিছুই হতে পারেননি।
শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে একটা দেশের যে উন্নতি হয়, যারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে তারা ক্ষমতা থাকলে যে দেশের জন্য উন্নতি হয়, আজ আমরা সেটা প্রমাণ করেছি।
খালেদা জিয়ার আমলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল দাবি করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকাকালে খালেদা জিয়া শিক্ষাঙ্গনে অস্ত্রের ঝনঝনানি তৈরি করেছিলেন। তিনি (খালেদা জিয়া) নিজে পড়াশোনা করতে পারেনি বলে অন্যরা পড়াশোনা করুক সেটাও চায় না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সে (বেগম জিয়া) একবার ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিল। দুইটা বিষয়ে পাস করেছিল। উর্দু আর অংক। সারাদিন পেয়ারে পাকিস্তান বলে জপ করে। সেই জন্য উর্দুতে পাস করেছিল। আর টাকা পয়সার হিসাব করতে হয়, তাই অংকে পাস করেছিল।’
সমাবেশে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক বেশি খরচ করতে হয়। বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। একইভাবে পানি উৎপাদনেও সরকার ভর্তুকি দিয়েছে। পানি ব্যবহারেও সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি গ্রামে গেলাম, সেখানে দেখি সকলের হাতে মোবাইল ফোন। সবাই ছবি তুলছে। অথচ বিএনপির আমলে কম্পিউটার ছিল না।’
সরকার ‘লার্নিং এন্ড আর্নিং’ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় না থাকে, অন্য কেউ যদি ক্ষমতায় আসে সব ধ্বংস করে দেবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীগের সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাহজাহান খান; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের নেতাকর্মীরা।