প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের একটি রাষ্ট্র দিয়েছেন। একটি জাতি হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন। তিনি তাঁর জীবনকে উৎসর্গ করেছে বাংলাদেশে শোষিত বঞ্চিত মানুষের জন্য।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগুন দিয়ে যারা মানুষ হত্যা করেছে দেশের মানুষ আর তাদের ক্ষমতায় বসাবে না। দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের থেকে সতর্ক থাকতেও আহŸান জানিয়েছেন তিনি। আজ (সোমবার) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আয়োজিত স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের যুদ্ধটা জনযুদ্ধ ছিল। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও মাঠে নেমে গিয়েছিল। যে যেভাবে পেরেছে, পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এ দেশের মা বোনেরা গেরিলা যোদ্ধাদের রান্না করে খাবারদাবারের ব্যবস্থা করেছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে। কাজেই একটা জনযুদ্ধের মধ্যে দিয়েই আমারা এ দেশের স্বাধীনতা অর্জন করি।
একাত্তরে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে অর্জিত স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শুরু করা ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই এসেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতার ৫৩ বছর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই ১৯৪৮ সালে আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন; সেই আন্দোলনের পথ বেয়েই তিনি ধীরে ধীরে এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেন।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ আমাদের সমর্থন না দিলেও সে সব দেশের জনগণ আমাদের পাশে ছিল। যখন কৃত্রিমভাবে দুর্ভাগ্য তৈরি করে দেশকে ব্যক্ত করার চেষ্টা করা হলো তখন কেউ ক্ষমতা নিতে আসেনি কিন্তু যখন দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া শুরু হয় ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইতিহাস বিকৃত করা হলো এবং জাতির পিতাকে নিয়ে নানা অপপ্রচার শুরু করলো স্বাধীনতা বিরোধীরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবৈধ ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে জন্ম যাদের তারাই আজ গণতন্ত্র চায়। তারা নাকি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে, সংপ্রাম করে। তারা বিদেশিদের কাছে নালিশ করে তাদের উপর নাকি অত্যাচার করা হয়। তারা মনে করে দেশের বাহিরে থেকে এসে কেউ তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে। বিদেশীদের কাছে নালিশ করে লাভ হবে না।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় এসে আমার কোনো অত্যাচার করি নাই। অত্যাচার জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে করেছে। ৫৭৭ জন সেনা অফিসার কে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে গুম করে, যাদের লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সাদা মাইক্রো বাসে করে ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতা কর্মীদের তুলে নেয়া হতো। যাদের তুলে নেয়া হতো তাদের কখনো আর খুঁজে পাওয়া যেত না।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে থাকাকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে এর কোনো প্রতিশোধ নেয়নি। তারা আমাদের সাথে যা করেছে তার যদি এক ভাগও আমরা করতাম তাহলে ওদের খুঁজে পাওয়া যেত না। কিন্তু আমরা সেই প্রতিশোধের পথে যাইনি। আমরা মানুষের জন্য ন্যায়ের কাজ করে যাচ্ছি।
দেশ প্রধান বলেন, বিদেশে গিয়ে শুধু নালিশ করে। এটাই তাদের চরিত্র। তারা মনে করে বাইরের কেউ তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সজাগ অনেক সচেতন।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় যেতে পারিনি কারণ দেশের স্বার্থ বিলিয়ে বঙ্গবন্ধু মেয়ে ক্ষমতায় যেতে পারে না। তবে তখন ক্ষমতা না এলেও দেশের মানুষ তুলনামূলক চিত্র দেখতে পেয়েছে তারা ক্ষমতায় এসে কি অত্যাচার করেছে। তারা নির্বাচনে আসবেনা, কিন্তু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করবে। তারা মানুষকে ধোকা দিয়ে যাচ্ছে।