আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জনসমাগম কাকে বলে তা শনিবার (২৯শে অক্টোবর) থেকে বিএনপিকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। আজ (২৮শে অক্টোবর) তাঁর বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে এ কথা বলেন তিনি।
শনিবার (২৯শে অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে মাঠে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। মূলত বিএনপির ধারাবাহিক সমাবেশের পাল্টা জবাব দিতেই শনিবারের এ সম্মেলন ঢাকায় হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে ব্যাপক জনসমাগম করতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি।
বিএনপির তিনটি সমাবেশ দেখে সরকার কাঁপাকাঁপি শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে সরকারের কাঁপাকাঁপির কী আছে? কোনো কোনো সমাবেশে ১০ লাখের টার্গেট করেও ১ লাখ হয়নি, আবার কোথাও ৫ লাখ চিন্তা করে ১ লাখের অর্ধেকও হয়নি। এটাই তো বিএনপির সমাবেশের চেহারা।’
ওবায়দুল কাদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরীতে ওয়ার্ড ও থানার সম্মেলনে কত হাজার লোক হয়েছে, তা দেখুন; যা পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খেলা হবে বলা প্রসঙ্গে বলেন, ‘যারা ১৭ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে বলেছি। খেলা হবে হাওয়া ভবন, লুটপাট, অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে; খেলা হবে দুর্নীতি, বিদ্যুৎবিহীন খাম্বার বিরুদ্ধে।’
তিনি আরও বলেন, ‘খেলা হবে সোয়া এক কোটি ভুয়া ভোটার সৃষ্টিকারী, ভোট চুরি আর জালিয়াতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে দেশের উন্নয়নবিরোধীদের বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তির লালন ও পালনকারীদের বিরুদ্ধে। খেলা হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করে না, তাদের বিরুদ্ধে।’
নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা না দিলে কোনো নির্বাচন হবে না, বিএনপির মহাসচিবের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনাদের দৃষ্টিতে নিরপেক্ষতার মানদন্ড কী, সেটার প্রমাণ তো আপনারা ক্ষমতাসীন হয়ে বারবার দেখিয়েছেন।’
বিএনপির নেত্রীই তো একসময় বলেছিলেন পাগল আর শিশু ছাড়া কেউই নিরপেক্ষ নন, তাহলে আপনারা কি পাগল ও শিশু দ্বারা পরিচালিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন চান, প্রশ্ন করেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ’ক্ষমতার মোহে অন্ধ বিএনপির নেতারা সেটাই চাইতে পারেন। এ দেশে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন রয়েছে, যার অধীন যথা সময়ে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সরকার শুধু নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দেবে।’
নির্বাচন কোনো ব্যক্তিবিশেষ বা কোনো দলের খেয়ালখুশিমতো হবে না, এমনটা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের জানান, ’পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, একইভাবে বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে।’
দেশের রিজার্ভ নিয়ে বিএনপি কথা বলে কোন মুখে, এটা জনগণের প্রশ্ন, এমন দাবি করে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘রিজার্ভের টাকা সরকার গিলে ফেলেছে নাকি আমদানি ব্যয়ে দেশের উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণে ব্যয় করেছে? রিজার্ভের টাকা তো গিলে ফেলেছে ফখরুল সাহেবরা। রিজার্ভ কত রেখে গিয়েছিলেন মনে আছে? যখন ক্ষমতা ছেড়েছেন, তখন যা রেখে গিয়েছিলেন, তা পাঁচ বিলিয়নেরও কম।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির আমলে রিজার্ভ তো শূন্যই ছিল, সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ৪৮ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আমাদের রিজার্ভ উঠেছিল।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ বৈশ্বিক সংকটের কারণে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন থেকে ৩৬ বিলিয়নে এসে ঠেকেছে। এ সংকট শুধু বাংলাদেশের নয়, দুনিয়ার সব উন্নত দেশ হিমশিম অবস্থায় রয়েছে।’ বর্তমানে যে রিজার্ভ রয়েছে, তা দিয়ে আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাস সরকার আমদানি করতে পারবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।