জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে শেষবারের মতো ভাষণ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ভাষণে নিজের ক্যারিয়ারসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক সমস্যা ও বৈশ্বিক রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। কয়েক দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ার, স্নায়ুযুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং ভিয়েতনামের সাথে আমেরিকার যুদ্ধের কথা তুলে ধরে নিজের বক্তব্যের সূচনা করেন বাইডেন। পাশাপাশি জাতিসংঘের সনদ রক্ষার কথাও উল্লেখ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এর আগে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশন শুরু হওয়ার পর ভাষণ দেন জাতিসংঘের মহাসচির অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা বিশ্বব্যাপী এমন এক চ্যাঞ্জেলের মুখে রয়েছি যা আগে কখনও দেখিনি। বৈশ্বিকভাবেই এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। যুদ্ধ বেড়েই চলছে এবং তার শেষ হওয়ার কোনো উপায় দেখছি না।’’
অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এটি তার চতুর্থ এবং শেষ ভাষণ। এসময় তিনি বলেন, “আমি জানি, অনেকেই আজ বিশ্বের দিকে তাকিয়ে বিভিন্ন সমস্যাগুলো দেখছে এবং হতাশা প্রকাশ করছে। কিন্তু আমি না। আমি হতাশ হবো না।” এসব সমস্যা সমাধানে বিশ্ব কীভাবে একত্রিত হতে পারে সে ব্যাপারে নিজের দর্শন তুলে ধরেন। পাশাপাশি জাতিসংঘের সনদ রক্ষার কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বিশ্ব নেতাদের মনে রাখা উচিত ক্ষমতায় থাকার চেয়েও কিছু জিনিস বেশি গুরুত্বপূর্ণ, যা হলো জনগণের কথা ভাবা। এসময় নিজের পুনর্র্নিবাচনের দৌড় থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তের উদাহরণ দেন তিনি।
জো বাইডেন আরও বলেন, ‘‘আমি গণতন্ত্র সুরক্ষিত করতে চেয়েছি। দ্বিতীয় মেয়াদের রাষ্ট্রপতি হিসাবে থাকতে চাই কিনা তার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এটি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। রাষ্ট্রপতি হওয়া আমার জীবনের সম্মান। আমি অনেক কিছুই করতে চাই তবে আমি চাকরিকে যতটা ভালোবাসি, দেশকে তার চেয়ে বেশি ভালোবাসি। আমি ৫০ বছর জনসেবা করার পরে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন সময় এসেছে নতুন প্রজন্মেও নেতৃত্বের আমার জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। আমার সহকর্মী নেতৃবৃন্দ, আমাদের কখনই ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে আমরা এখানে কাদের প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি। আমরা যেন কখনও ভুলে না যাই, ক্ষমতায় থাকার চাইতেও কিছু জিনিস বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
মধ্যপ্রাচ্যের অপ্রতিরোধ্য উত্তেজনা নিয়েও কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি আলোচনার চুক্তি খুবই নিকটে কিন্তু ৭ই অক্টোবর ইসরাইলের উপর হামাসের ভয়াবহ হামলার কথাও ও বিশ্বকে মনে রাখতে হবে।’ ইসরাইল ও গাজাযুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক সমাধানে জোর দেন তিনি। লেবাননের হামলা সম্পর্কেও তিনি বলেন যুদ্ধ কারোরই কাম্য নয়।