জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) সামিটের সাইডলাইনে তাদের মধ্যে বৈঠক হয়।
বৈঠকে বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়:- অর্থনৈতিক সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। উভয় নেতা আধুনিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্ভাবন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি ছয়টি কমিশনের দাখিল করা সংস্কার প্রতিবেদনগুলোর বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করছেন। ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হলে, রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে, যা জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের গণতান্ত্রিক চেতনা বজায় রাখবে।
এ ছাড়া, দুই নেতা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। যার মধ্যে ছিল জুলাই অভ্যুত্থানের কারণ, বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট এবং মিয়ানমারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি।
কীভাবে তরুণরা দুর্নীতিপূর্ণ শাসনের অবসান ঘটানোর জন্য জুলাই অভ্যুত্থানে যোগ দিয়েছিল তা জার্মান চ্যান্সেলরকে ব্যাখ্যা করেন প্রধান উপদেষ্টা। একজন ১২ বছর বয়সী ছাত্র অভ্যুত্থানে যোগদানের আগে তার মায়ের কাছে একটি চিঠি লিখে শহীদ হন, এই ঘটনা প্রধান উপদেষ্টা শলৎসকে জানান।
ড. ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করার আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্ভাবনা দেখার জন্য একটি জার্মান ব্যবসায়ী দলকে ঢাকায় পাঠানোর অনুরোধ জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে আরও জার্মান বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।
একই সঙ্গে তিনি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরির জন্য শলৎসের সহায়তা কামনা করেন।
এর আগে, সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাতে সুইজারল্যান্ডের ডাভোসের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন ড. ইউনূস। পরে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে তিনি সুইজারল্যান্ডে পৌঁছান। এ সময় সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম তাকে স্বাগত জানান।
চার দিনের সরকারি সফর শেষে আগামী ২৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।