সংসদ ভবন এলাকায় প্রবেশ করা জুলাই যোদ্ধাদের ধাওয়া দিয়ে বের করে দিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বেলা ১-২০ মিনিটের দিকে এই ঘটনা ঘটে। এতে বিক্ষিপ্ত জুলাই সদস্যরা সংসদ ভবনের ১২ নম্বর গেট ভেঙে ফেলেন। তারা বাইরে বের হয়ে বেশ কয়েকটি ট্রাক ও বাস ভাংচুর করেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। ভাংচুর করা গাড়িগুলোর মধ্যে দুইটি পুলিশের গাড়ি রয়েছে। গাড়ি ভাংচুর করার সময় পুলিশ সদস্যরা আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। বর্তমানে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছে। পুলিশকে লাঠিচার্জ করতেও দেখা গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করেছেন পুলিশ সদস্যরা। পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করার পর আন্দোলনকারীরা পিছু হটলেও দূর থেকে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। প্রায় তিন ঘণ্টা অবস্থানের পর সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানস্থল থেকে বিক্ষুব্ধ জুলাই যোদ্ধাদের লাঠিচার্জ করে বের করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে হঠাৎই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা। রাত থেকে অবস্থান করা বিক্ষুব্ধ জুলাই যোদ্ধারা প্রবেশ করার চেষ্টা করেন সংসদ ভবনে। অনেকেই নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে গ্রিলের ওপর দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। পরে মূল ফটক উন্মুক্ত করে দেন দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
৫ শতাধিক বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারী মূল মঞ্চ এবং অতিথিদের জন্য নির্ধারিত স্থানে বসে পড়েন। বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, সনদ প্রণয়নে তাদের পরামর্শ নেয়নি সরকার। একইসঙ্গে স্বীকৃতি না দিয়ে করা হয়েছে অবমূল্যায়ন। ঘোষণাপত্রের মতো এখানেও আইনি ভিত্তি না থাকার অভিযোগ তাদের।আন্দোলনকারীরা তাদের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিকে মঞ্চে জায়গা দেয়ার দাবি জানান।
দুপুর একটার কিছু আগে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত হন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজসহ কমিশনের সদস্যরা। হত্যার বিচার, জুলাই যোদ্ধাদের যথোপযুক্ত সম্মান, আর্থিক সহায়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে আশ্বস্ত করেন ড. আলী রীয়াজ।তবে আলী রীয়াজের বক্তব্যেও আশ্বস্ত হতে পারেননি জুলাই যোদ্ধারা। এরপরই শুরু হয় পুলিশি অ্যাকশন।বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের। উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে, জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সব দলের থাকা নিয়ে এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।