বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জাতীয় জুলাই সনদ স্বাক্ষরের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিনিধিরা। রাত ৮টা থেকে ৮টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত এই সাক্ষাৎ হয়।
এসময় কমিশনের পক্ষ থেকে সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার ও মনির হায়দার চৌধুরী বিএনপি চেয়ারপারসনের হাতে আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন। তারা কমিশনের সভাপতি ও সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে এই আমন্ত্রণ জানান।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে আসেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা। খালেদা জিয়া হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে আমন্ত্রণপত্র পড়ে দেখেন।
এ সময় বদিউল আলম মজুমদার, মনির হায়দার ও বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বদিউল আলম মজুমদার ও মনির হায়দার। বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিতে ও প্রধান উপদেষ্টার সালাম জানাতে আমরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কাছে এসেছিলাম। তিনি দাওয়াত গ্রহণ করেছেন এবং অনুষ্ঠানের সফলতা কামনা করেছেন।’
আমন্ত্রণ পেয়ে খালেদা জিয়া অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছেন বলে জানান মনির হায়দার। তিনি বলেন, জুলাই সনদকে খালেদা জিয়া স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এটা বাংলাদেশের জন্য বড় একটা মাইলফলক। বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ সৃষ্টিতে এই সনদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এ সময় জুলাই সনদ স্বাক্ষর নিয়ে মনির হায়দার বলেন, ‘এটা বাংলাদেশের ইতিহাসের বড় বড় রাজনৈতিক ঘটনার একটি। গত ৫৪ বছরে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ এর আগে কখনো নেওয়া হয়নি। সনদ স্বাক্ষরের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অবিসংবাদিত নেতা খালেদা জিয়ার উপস্থিতি খুবই স্বাভাবিক একটা চাওয়া। তিনি উপস্থিত থাকতে পারেন বা না পারেন, তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো একটা অবধারিত বিষয়। প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ গুরুত্বসহকারে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমাদের পাঠিয়েছেন। খালেদা জিয়া বলেছেন, তাঁর শরীর ভালো থাকলে অবশ্যই তিনি সেখানে সশরীরে যেতেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে মনির হায়দার বলেন, ‘সনদ স্বাক্ষর নিয়ে আমরা নেতিবাচক কোনো কিছু ভাবতে চাই না, ভাবার অবকাশও দেখছি না। আমরা আশা করি, সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হবেন এবং স্বাক্ষর করবেন। এই সনদ অনুযায়ী বাংলাদেশ নতুন এক গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা শুরু করবে।’
আগামীকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত ‘জাতীয় জুলাই সনদ, ২০২৫’-এর স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এদিন বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই আয়োজনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত থাকবেন। সে সঙ্গে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা ও উচ্চপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তার।