ঢাকা ওয়াসায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে আবারও ৩ বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন তাকসিম এ খান। বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মুস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। এ নিয়ে টানা সপ্তমবারের মতো ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পেলেন তাকসিম।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন ১৯৯৬ এর ২৮(২) ধারা মোতাবেক প্রকৌশলী তাকসিম এ খানকে তার বর্তমান চাকরির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর অর্থাৎ ১৪ অক্টোবর ২০২৩ থেকে তিন বছরর জন্য ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ/পুনঃনিয়োগের জন্য সরকারের অনুমোদন নির্দেশন দেওয়া হলো।
উল্লেখ্য, ১৩ বছর আগে ওয়াসা প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির অবস্থার পরিবর্তনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন তাকসিম এ খান। তার নেতৃত্বে রাজধানী জুড়ে পানির আধুনিক সংযোগসহ আমূল পরিবর্তন এনেছে ওয়াসা। পাশাপাশি পয়ঃশোধনাগার পুনঃনির্মাণ ও সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তাকসিম এ খানের সময়ে রাজধানীতে বসবাস করা শ্রমজীবী ও স্বল্প আয়ের মানুষকে বৈধভাবে পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে বৈধভাবে রাজধানীর ৩০০ বস্তিতে ৬৩ হাজার ৬১৮ পরিবারকে পানি সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বর্তমান প্রতিষ্ঠান প্রধানের নেতৃত্বে লসের খাতা বন্ধ করে লাভের মুখ দেখেছে ঢাকা ওয়াসা। এক সময়ে ঢাকা ওয়াসার উৎপাদিত পানির শতকরা ৪০ শতাংশ সিস্টেম লস হিসেবে ধরা হলেও সেটি কমে মাত্র ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। এর মূল কারণ ‘ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (ডিডব্লিএসএনআইপি)। এই প্রকল্পের ফলে পানির গতি প্রবাহ ও উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। পানি সরবরাহের জন্য বসানো হয়েছে আধুনিক পাইপ লাইন। ফলে সিস্টেম লস কমিয়ে আয়ের পথে হাঁটছে ঢাকা ওয়াসা।
রাজধানীর কয়েক কোটি মানুষের প্রতিদিনের পানির চাহিদা ২৬০ কোটি লিটার। এই চাহিদা মেটাতে ঢাকা ওয়াসা সায়দাবাদ পানি শোধনাগার ও পদ্মা (জশলদিয়া) পানি শোধনাগার স্থাপন করেছে। মোট চাহিদার বিপরীতে ঢাকা ওয়াসা এখন ২৭০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে।
পাশাপাশি রাজধানীবাসীর পয়ঃপরিশোধন করে পরিবেশ উপযোগী করতে প্রকল্প নিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। যার একটি দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন। দেশে এটাই প্রথম এ ধরনের সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট।
প্রতিদিন ৫০ মিলিয়ন লিটার পয়ঃশোধন ক্ষমতাসম্পন্ন দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম একক পয়ঃশোধন কেন্দ্র (এসটিপি) এটি। যা রাজধানীর আশপাশের নদীগুলোকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করবে। নদীগুলোকে বাঁচাতে এটি একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত বলছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।