কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ উদ্বোধনের পর সেই সুড়ঙ্গ পথে নিজের গাড়ি বহর নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে তিন মিনিটে আনোয়ারায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী।

শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম তীরে একটি ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের পর পর আতশবাজি ফোটানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন।

উদ্বোধনের পরপরই গাড়ি বহর নিয়ে টানেল পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে আনোয়ারায় যান প্রধানমন্ত্রী। টানেল পার হতে তিনি নিজের হাতে টোল দেন।

৩ মিনিটে বঙ্গবন্ধু টানেল পার হলেন প্রধানমন্ত্রী, দিলেন টোল

দুপুরে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কোরিয়ান ইপিজেড মাঠে জনসমাবেশে যোগ দেন।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজারের ৪০ কিলোমিটার দূরত্ব ও এক ঘণ্টা সময় কমিয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেল। টানেলটি পার হতে সময় লাগবে মাত্র কয়েক মিনিট।

দুটি টিউবের চার লেনের সড়কের মাধ্যমে নদীর তলদেশ দিয়ে পাঁচ মিনিটে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে যাওয়া যাবে আনোয়ারায়।

আগামী রোববার (২৯ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে সর্বসাধারণের যান চলাচলের জন্য টানেলটি খুলে দেওয়া হবে।

দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম সুড়ঙ্গপথ এই টানেল। এটি চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগর উপকূল ঘিরে শিল্পের নতুন দুয়ার খুলে যাচ্ছে। রোববার (২৯ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

কর্ণফুলীর টানেল শুধু চট্টগ্রাম শহরের দুই প্রান্তকে যুক্ত করবে না, হবে শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের যোগসূত্র। মাটির প্রায় ১৪০ ফুট গভীরে নির্মিত ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টানেলটি গাড়িতে পাড়ি দিতে সময় লাগবে তিন থেকে সাড়ে তিন মিনিট। টানেলে দুটি টিউব রয়েছে। এই টিউবগুলো কর্ণফুলী নদীর তলদেশ থেকে ১০৫ ফুট গভীরে নির্মাণ করা হয়েছে। গাড়ির জট যাতে না হয়, সে জন্য রয়েছে ২০টি টোল বুথ।

কর্ণফুলী নদীতে বিভক্ত চট্টগ্রাম শহরকে সাংহাইয়ের মতো ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ হিসেবে গড়তে টানেল নির্মাণের পরিকল্পনা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর টানেল নির্মাণে প্রকল্পটি তার সরকারের অনুমোদন পায়। পরের বছরের ১৪ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।