প্রভাবশালী মার্কিন ডানপন্থি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা চার্লি কার্ককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ইউটা অঙ্গরাজ্যের এক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বক্তব্য দেয়ার সময় তাকে গুলি করা হয়। তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন প্রভাবশালী মিত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে একটি ছোট তাঁবুর নীচে বসে আছেন চার্লি। তখনই গুলির বিকট শব্দ। চেয়ার থেকে ছিটকে পড়ে যান তিনি। মুহূর্তে দর্শকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যে যেদিকে পারে পালাতে শুরু করে। চার্লির গলায় গুলি লেগেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

বিবিসি জানিয়েছে, এখনো দুষ্কৃতকারীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

ঘটনার পরে উটা-র সিনেটর মাইক লি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। সবাইকে অনুরোধ, চার্লি কার্ক এবং সেখানে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের জন্য দয়া করে প্রার্থনা করুন।

ঘটনার পরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, কার্কের সম্মানে তিনি আগামী রোববার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ইউটা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বুধবার ইউটা ভেলি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গুলিটি তার ঘাড়ে এসে লাগে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

ইউটার গভর্নর স্পেন্সার কক্স এ ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করেছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের রাজ্যের জন্য একটি কালো দিন। এটা আমাদের জাতির জন্য একটি দুঃখজনক দিন।’ কক্স এই আপাত হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করে বলেন, এটা মার্কিনিদের খোলাখুলিভাবে আলোচনা ও বিতর্ক করার অধিকারের প্রতি বড় হুমকি।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আমেরিকা কামব্যাক ট্যুর’ নামে ১৫টি অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল চার্লি কার্কের। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত বুধবার প্রথম তিনি ইউটা ভ্যালি ইউনিভার্সিটিতে যান। চার্লি প্রায়ই এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এসব অনুষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করে। এ সময় নানা বিষয় নিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় ও বিতর্ক করেন।

চার্লি কার্ক টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ নামের একটি সংগঠনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। এটি যুক্তরাষ্ট্রে রক্ষণশীল তরুণদের সবচেয়ে বড় সংগঠন। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান ট্রাম্পের পক্ষে তরুণ ভোটারদের সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এটি।

দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্প চার্লি কার্ককে তরুণ ও সংখ্যালঘু ভোটারদের সমর্থন আদায়ের কৃতিত্ব দিয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) চার্লি কার্কের অনুসারী ৫৩ লাখ। তিনি জনপ্রিয় পডকাস্ট ও রেডিও অনুষ্ঠান ‘দ্য চার্লি কার্ক শো’-এর উপস্থাপক ছিলেন। সম্প্রতি তিনি ফক্স নিউজের ‘ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’-এর সহ-উপস্থাপক হিসেবেও কাজ করেছেন।

চার্লি কার্ক নিহতের ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এফবিআই। এক্স প্ল্যাটফর্মে এফবিআই পরিচালক কাশ প্যাটেল লিখেছেন, ‘আজকার ভয়ঙ্কর গুলিতে চার্লি কার্কের জীবনহানির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এখন হেফাজতে। ইউটার স্থানীয় ও রাজ্য কর্তৃপক্ষ এফবিআইকে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ।’