আমাদের দেশের ভবিষ্যত আমাদেরকেই নির্মাণ করতে হবে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আমেরিকা থেকে এসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, চীন থেকে এসে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কিংবা ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি এসে ধাক্কা দিয়ে কিছু করে দিয়ে যাবে না। যা করার আমাদেরকেই করতে হবে। এই বিষয়গুলো আমাদেরকে মনের মধ্যে গেঁথে নিতে হবে।”
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীতে ‘রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলামের দূরদৃষ্টিতে ক্ষমতায়ন বাংলাদেশ: নেতৃত্ব, ঐক্য এবং প্রবৃদ্ধির পথে কূটনীতি ও শাসন ব্যবস্থা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে যেমন আমরা বহুতবাদ এক হয়ে যুদ্ধ করেছি। তেমনি ২০২৪ সালে ছাত্রদের ওপর যখন গুলি চালায়, তখন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। যেভাবে গণঅভ্যুত্থানে সবাই এক হয়েছিল, সেভাবে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের লোকের সংখ্যা ছিল সাত কোটি আর এখন ১৮ কোটি। সেই সময়ে আমাদের খাদ্য ঘাটতি ছিল ২৮ লাখ মেট্রিক টন আর এখন খাদ্য ঘাটতি নেই বললেই চলে। এই খাদ্য ঘাটতি মিটিয়ে খাদ্যনিরাপত্তায় কাজ করছেন দেশের কৃষক ও কৃষি বিজ্ঞানীরা। যেটা আমরা মনে করি না, বুঝিও না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করি, তার আগে আমাদের নেতা অনেকে ছিলেন। অত্যন্ত বড় বড় নেতা— মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেখ মুজিবুর রহমান। আমাদের একেক জনের একেক চিন্তা ছিল। কারও চিন্তা ছিল সমাজতন্ত্র করবো, কেউ সমাজকে পাল্টে দেবো, কেউ ধর্মীয় ব্যবস্থাকে এখানে প্রতিষ্ঠিত করবো… সব মিলিয়ে ছিল। তারপর যখন যুদ্ধ (মুক্তিযুদ্ধ) শুরু হয়েছিল, তখন সবাই এক হয়েছে লড়াই করার জন্য। আজ ২০২৪ সালেও একই ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন চিন্তা-ভাবনা নিয়ে এসেছি সবাই। কিন্তু যেদিন ছাত্রদের উপর গুলি করা হয়েছে, তখন সবাই এক হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, আসুন আজকে ঠিক একইভাবে সবাই এক হয়ে যাই। সমস্যা আছে, সমাধান হবে। ইতোমধ্যে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি। ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাই তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন, বিশ্বাসও আছে তিনি সফল হবেন। আসুন সবাই মিলে তাকে সাহাস্য করে নিজেরা নিজেদের সাহায্য করি। তবে, একটা কথা জোর দিয়ে বলতে চাই, গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রকে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। এটা চর্চা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আর অংশ নেন, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ (ভার্চুয়াল), যুক্তরাষ্ট্রের রোজান ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এস রশিদুজ্জামান, পররাষ্ট্র সচিব জসীমউদ্দীন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান চৌধুরী, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সালেহ শাহরিয়ার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র ও পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিস ফারাহ কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. রাশেদ তিতুমীর, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড মাহবুবুর রহমান, আমার বাংলাদেশের (এবি) সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, চিলির অনারি কনসাল আসিফ এ চৌধুরী, সিরাজুল ইসলামের মেয়ে সাবিনা ইসলাম অংশ নেন।