বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করার লক্ষ্যে টেলিটকের ফাইভ-জি প্রকল্প স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেক বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছিল প্রকল্পটি। ডলারের সঙ্কট এবং কৃচ্ছতা সাধন নীতিতে থাকায় এই মুহূর্তে প্রকল্পটি স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একনেক বৈঠক শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, ফাইভ জি এর বদলে পূর্ণাঙ্গ ফোর জি সেবা দেওয়ার বিষয়ে টেলিটককে মনোযোগী হওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠকে রাজধানীতে টেলিটকের ফাইভ জি সেবা প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যেসব কাজের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হবে তা আপাতত স্থগিত রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই ডলার ব্যবহারের ওপর চাপ কমাতে প্রকল্পটি বাদ দেওয়া হয়েছে। আর আপাতত দেশে ফাইভ জি কাভারেজের চেয়ে ফোর জির পরিধি বাড়ানো জরুরি। সেই আঙ্গিকে মোবাইল অপারেটরদের কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তবে সার্বিকভাবে বিদেশি ঋণের প্রকল্পের পরিধি কমবে কি না, সে বিষয়ে আলোচনা হয়নি।

২৩৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালু করতে চায় টেলিটক। এই প্রকল্পের ৮০ শতাংশ ইক্যুইপমেন্ট বিদেশ থেকে ডলার দিয়ে কিনতে হবে। ফাইভ-জি প্রকল্পের এলাকাগুলো হলো- ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় গণভবনসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সরকারি গূরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো, মোহাম্মদপুর, শের-ই বাংলা নগর, বনানী, গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট ও উত্তরা থানা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বঙ্গভবন ও সচিবালয়সহ মতিঝিল, রমনা, শাহবাগ ও ধানমন্ডি থানার সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ও বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলো।

এদিকে, একনেক সভায় ৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যা সরকারি অর্থায়নে ব্যয় করা হবে ১ হাজার ৮৩১ কোটি ৪০ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ৫৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সাহায্য ১২২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো, ‘কক্সবাজার জেলার বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা উন্নত করতে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় নাফ নদী বরাবর পোল্ডারগুলোর (৬৭/এ, ৬৭, ৬৭/বি এবং ৬৮) পুনর্বাসন (১ম সংশোধিত)’; ‘বিনা’র গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ’; ‘নির্বাচিত পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনগুলোর জন্য বেলারুশ থেকে যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম সংগ্রহ’। ‘উত্তরা লেক উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’; ‘ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় সদর দপ্তর স্থাপনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসন’; ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ’; ‘কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, রাজশাহী (১ম সংশোধিত)’।