ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথেও একধাপ এগিয়েছে সরকার। আগামীকাল (বুধবার) চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সর্বপ্রথম স্থাপিত ‘চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের’ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর, শেখ জামাল ডরমিটরি ও রোজী জামাল ডরমিটরির উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে সংযুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

দেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে সফল উদ্যোক্তা তৈরি, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা এবং ইন্ডাস্ট্রি- একাডেমিয়া কোলাবোরেশনকে আরও সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের সুযোগ আরও অবারিত করার মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তি খাতের আয় প্রত্যাশিত মাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) সর্বপ্রথম শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হয়েছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে প্রায় ১১৭ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় রাউজানের চুয়েট ক্যাম্পাসে প্রায় ৫ একর জমির ওপর ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১০তলা একটি ইনকিউবেশন ভবন এবং ৩৬ হাজার বর্গফুটের ৬তলা একটি মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবন নির্মিত হয়েছে।

ইনকিউবেশন ভবনের মধ্যে রয়েছে স্টার্টআপ জোন, আইডিয়া/ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক জোন, ব্রেইনস্ট্রর্মিং জোন, ই-লাইব্রেরি, ডাটা সেন্টার, রিসার্চ ল্যাব, বঙ্গবন্ধু কর্নার, এক্সিবিশন/প্রদর্শনী সেন্টার, ভিডিও কনফারেন্সিং কক্ষ, সভাকক্ষ ইত্যাদি। উদ্যোক্তা ও গবেষকদের কাজের সুবিধার্থে একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ল্যাব, একটি মেশিন লার্নিং ল্যাব, একটি বিগ ডাটা ল্যাব, অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকবোন, একটি সাব-স্টেশন ও সোলার প্যানেল রয়েছে।

এছাড়া ব্যাংক ও আইটি ফার্মের জন্য পৃথক কর্নার, অত্যাধুনিক সাইবার ক্যাফে, ফুড কোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া, রিক্রিয়েশন জোন, মেকার স্পেস, ডিসপ্লে জোন, প্রেস/মিডিয়া কাভারেজ জোন, নিজস্ব পার্কিং সুবিধা রাখা হয়েছে। অন্যদিকে মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবনে ২৫০ জন ধারণক্ষমতার সুসজ্জিত অডিটোরিয়াম এবং ৩০ জনের ধারণক্ষমতার পৃথক ৮টি কম্পিউটার ল্যাব কাম সেমিনার কক্ষ রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি ২০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ৪ তলা পৃথক দুইটি (১টি নারী ও ১টি পুরুষ) আবাসিক ডরমিটরি ভবন নির্মিত হয়েছে। প্রতিটি ডরমিটরিতে ৪০টি কক্ষ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হচ্ছে একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গবেষণা উদ্ভাবন এবং উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য একটি কার্যকরী ব্যবস্থা। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ স্নাতক (গ্র্যাজুয়েট) তৈরির মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই ইনকিউবেটর ভূমিকা রাখবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।