বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশ করে অস্বাভাবিকভাবে ডিমের মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ডায়মন্ড এগ লিমিটেডকে আড়াই কোটি টাকা এবং সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডকে এক কোটি টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এ বিষয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করে। মামলার শুনানি শেষে ২২শে জানুয়ারি (সোমবার) এই জরিমানার আদেশ দেয় কমিশন। রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে জরিমানার অর্থ বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সংশি¬ষ্ট খাতে জমা দিতে হবে। তা না হলে প্রতিযোগিতা আইনের আলোকে প্রতিদিন এক লাখ টাকা জরিমানা যোগ হবে।

এ বিষয়ে কমিশনের সদস্য মো: হাফিজুর রহমান বলেন,‘কোম্পানি দু,টি পারস্পরিক যোগসাজশের মাধ্যমে ডিমের দাম বাড়িয়েছে, সেটি প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিযোগিতা আইনের ১৫ ধারায় এই দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

তবে কোম্পানি দু,টি এই রায়ের বিষয়ে রিভিউ বা আপিল আবেদন করতে পারবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রদীপ রঞ্জন চক্রর্বতী জানান, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন এবং একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ‘১৫ দিনে ডিম ও মুরগির বাজার থেকে ৫১৮ কোটি টাকা লুট’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও বিভিন্ন পত্রিকা ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা কমিশনের নবম সভায় এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়।

তদন্ত প্রতিবেদন ও আইনজীবীদের লিখিত ও মৌখিক যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা কমিশন উভয় প্রতিষ্ঠানকে জরিমানার আদেশ দেয় বলে রায়ের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে।

অনুসন্ধান প্রতিবেদনে সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, ডায়মন্ড এগ লিমিটেডসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বাজারে ডিমের বিক্রয়মূল্য অস্বাভাবিকভাবে নির্ধারণ এবং বাজারে ডিমের সরবরাহ সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘনের অপরাধ প্রথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।

অনুসন্ধান প্রতিবেদনে কমিশন উল্লেখিত দুটি প্রতিষ্ঠানসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিপক্ষ প্রতিষ্ঠান কমিশনের শুনানিতে অংশগ্রহণ করে এবং শুনানি শেষে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের জন্য এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত দল গঠন করা হয় বলেও জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারপার্সন।

প্রদীপ রঞ্জন চক্রর্বতী জানান, উভয়পক্ষের শুনানির পর প্রমাণিত হয় যে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড ও ডায়মন্ড এগ লিমিটেড সমধর্মী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পরোক্ষভাবে ৫ই আগস্ট ২০২২ থেকে ৩১শে আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত তাদের উৎপাদিত ডিমের বিক্রয়মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করেছে। একই প্রক্রিয়ায় তাদের উৎপাদিত ডিমের সরবরাহ এবং বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করেছে, যা ২০১২ সালের প্রতিযোগিতা আইনের আলোকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

তদন্ত প্রতিবেদন ও আইনজীবীদের লিখিত ও মৌখিক যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা কমিশন উভয় প্রতিষ্ঠানকে জরিমানার আদেশ দেয় বলে রায়ের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে।