দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিমানবন্দরের কাওলা প্রান্তে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে দেশের প্রথম ঢাকা উড়ালসড়ক উদ্বোধন করেন তিনি। আগামীকাল বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।
এর ফলে মাত্র ১০ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পৌঁছাতে পারবেন যাত্রীরা। তবে, এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু নির্দেশনার পাশাপাশি পরিশোধ করতে হবে টোল।
সেতু বিভাগ এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ঢাকা উড়ালসড়কে দুই ও তিন চাকার যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। তাই মোটরসাইকেল বা অটোরিকশা নিয়ে উড়ালসড়কে ওঠা যাবে না। গাড়ি নিয়ে গিয়ে উড়ালসড়কে দাঁড়ানো ও যানবাহন থেকে নেমে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। উড়ালসড়কে উঠতে ও চলাচল করতে পারবেন না পথচারীরা।
এ ছাড়া এক্সপ্রেসওয়েতে চলতে হলে যানবাহনকে টোল দিতে হবে। টোল হার যানবাহনের শ্রেণিভেদে ভিন্ন।
শ্রেণি-১: কার, ট্যাক্সি, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) এবং হালকা ট্রাক (৩ টনের কম)—টোল ৮০ টাকা।
শ্রেণি-২: মাঝারি ট্রাক (৬ চাকা পর্যন্ত)—টোল ৩২০ টাকা।
শ্রেণি-৩: ট্রাক (৬ চাকার বেশি)—টোল ৪০০ টাকা।
শ্রেণি-৪: সব ধরনের বাস (১৬ সিট বা তার বেশি)—টোল ১৬০ টাকা।
ঢাকা উড়ালসড়কের (ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে রেললাইন ধরে তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কাছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে এই উড়ালসড়ক।
শনিবার কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশে চলাচল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগের (পিপিপি) ভিত্তিতে ঢাকার দ্রুতগতির উড়ালসড়কের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেতু বিভাগ।
ঢাকা উড়ালসড়ক প্রকল্পটি দুই ভাগে বিভক্ত। মূল নির্মাণকাজ ও সহযোগী কাজ। মূল নির্মাণকাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা সরকার ব্যয় করছে। বাকিটা বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান খরচ করছে।
এর বাইরে জমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও পরামর্শকদের পেছনে ব্যয়ে আলাদা একটি প্রকল্প আছে। এর পুরো অর্থই ব্যয় করছে সরকার। বর্তমানে এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে দুটি প্রকল্পে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা।
২০০৯ সালে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। ২০১১ সালে নির্মাণের চুক্তি হয়। নির্মাণকাল ধরা ছিল সাড়ে তিন বছর। তবে সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায়নি।