জঙ্গি, সন্ত্রাস আর মাদকের হাত থেকে বাঁচতে নতুন প্রজন্মকে সাহিত্যে চর্চার প্রতি মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার (পহেলা ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলা একাডেমি চত্বরে অমর একুশে বই মেলার অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে গেল বছর বাংলা সাহিত্যের ১১ টি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় ১৪ গুনীজনের হাতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে মঞ্চে বসেই ৭টি বিশেষ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বক্তব্য শেখ হাসিনা বলেন, নানা লড়াই সংগ্রামের পর বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেই ভাষাকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব সবার। বাংলা সাহিত্যের মাধুর্য গুন রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন প্রজন্ম শিল্পসাহিত্যে মনোনিবেশ করলে বিপথগামী থেকে তারা রক্ষা পাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে নানা ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়ন হয়েছে। মানুষ শান্তিতে আছে। তবে একটি মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে।
তেল বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক বাস্তবতায় সেটি করা হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা হবে।
এসময় মিক্ষাজীবনের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, যখন থেকে বইমেলা শুরু তখন থেকেই মেলায় আসতাম। সকাল থেকে সারাদিন এখানে ঘুরঘুর করতাম। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পায়ে শিকল পড়ে যায়; নিয়মের মধ্যে আসতে হয়, আবার চলে যেতে হয়; আগের মতো সেই স্বাধীনতাটা পাচ্ছি না; সেটা আর উপভোগ করতে পারি না।
তিনি বলেন, এ বটতলায় অনেক সময় কাটিয়েছি আমরা। কোভিডের কারণে দুই বছর সরাসরি মেলায় আসতে পারিনি। আজকে দীর্ঘদিন পর আসতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। যদিও আগের মতো সেই স্বাধীনতা পাচ্ছি না। তারপরও বাংলা একাডেমিতে আসতে পারলাম, এটাই হচ্ছে সব চাইতে বড় পাওয়া। এই প্রাঙ্গণে আমার সবসময় পদচারণা ছিল। আমি সবসময় বাংলা একাডেমির লাইব্রেরি ব্যবহার করতাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি শাসকরা আমাদের উপর উর্দুকে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল, এর প্রতিবাদে ১৯৪৮ সালে ২ মার্চ সলিমউল্লাহ মুসলিম হলে সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। একটা বিজাতীয় ভাষা, আবার সেটাকে যখন প্রতিবাদ করা হলো তখন বাংলা ভাষাকে আরবি বা উর্দু হরফে লেখার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হলো। সেই অধ্যায় আমাদের দেখতে হয়েছে। আবার পরবর্তীকালে বলা হলো ল্যাটিন হরফে লিখতে হবে। বাঙালি কোনোটাই মানেনি। আমরা সেটা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, সেটা নিয়ে এগিয়ে যাব।
বইমেলা উদ্বোধনের পর বাংলা একাডেমি চত্বরে কয়েকটি স্টল ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় সাথে তার ছোট বোন শেখ রেহানাও ছিলেন।