তাইওয়ানের চারপাশে শনিবার সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। এই মহড়ায় বিমান ও নৌবাহিনী তাদের সব সরঞ্জাম নিয়ে অংশগ্রহণ করে। এই অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা চীনের ইস্টার্ন কমান্ডের এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে এই মহড়ার কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আসল যুদ্ধে চীনের সেনাবাহিনীর সক্ষমতা যাচাই করতেই এই মহড়া চালানো হচ্ছে। একইসঙ্গে এটি বিচ্ছিন্নতাবাদী যেকোনো শক্তির জন্য সতর্কবার্তা। তবে পশ্চিমারা মনে করে, সম্প্রতি তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাইয়ের যুক্তরাষ্ট্রে সফরের প্রতিক্রিয়ায় এই মহড়া চালাচ্ছে চীন।
এদিকে, এই মহড়ার নিন্দা করেছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তাইপে।
তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাইয়ের যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রাবিরতি নেয়াকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
চীনের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করেই তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা খাত জোরদারে সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বীপটির চারপাশে সম্প্রতি চীনা উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় পাল্টা প্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়াতে তোড়জোড় শুরু করেছে তাইপেও। এরই অংশ হিসেবে এবার তাইওয়ান প্রণালী ও এর আশপাশে ব্যাপক মহড়া চালিয়েছে স্বশাসিত দ্বীপটি। শুক্রবার (১৮ অঅগস্ট) মহড়া চালানোর একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা বিভাগ।
ওই মহড়ার জবাবে তাইওয়ানের চারপাশে টহল চালিয়েছে চীন। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দ্বীপটির আকাশসীমায় অন্তত ৭টি চীনা যুদ্ধবিমান ও সাগরে ৭টি রণতরীর উপস্থিতি শনাক্ত করে তাইওয়ানের সেনাবাহিনী। চলতি মাসে এ পর্যন্ত ২০০টির বেশি যুদ্ধবিমান ও শতাধিক জাহাজ পাঠিয়েছে বেইজিং।
এদিকে চীনের হুমকি উপেক্ষা করেই যুক্তরাষ্ট্র ও প্যারাগুয়ে সফর শেষ করেছেন তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তাইপে। তাইওয়ান সম্প্রতি প্রতিরক্ষা খাতে অনেক উন্নতি করেছে বলেও জানান লাই।
চীনের অখণ্ডতা ধরে রাখতে দীর্ঘদিন ধরেই তাইওয়ান ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে বেইজিং। অঞ্চলটির চারদিকে সামরিক কর্মকাণ্ড জোরদারের পাশাপাশি তাইপে ইস্যুতে ওয়াশিংটনের পক্ষ নেয়া নানা পদক্ষেপেরও তীব্র সমালোচনা করে আসছে দেশটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাইয়ের যুক্তরাষ্ট্র সফরকে মোটেও সহজভাবে নেয়নি চীন। এর জেরে তাইওয়ান প্রণালীতে চীন সেনা উপস্থিতি বাড়াতে পারে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।