প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারুণ্যের শক্তিই একদিন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশে তিনি একথা বলেন। আজ শুক্রবার (পহেলা সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে তিনি সমাবেশে যোগ দেন।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ছাত্রলীগের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। এমনকি পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্রলীগই প্রথম প্রতিবাদ করে। এছাড়া ২০০৭ সালে ইমার্জেন্সির সময় ছাত্রলীগই প্রথম প্রতিবাদ করেছে। সেই এক-এগারোর সময়েও ছাত্রলীগ কোনো আপস করেনি। তারুণ্যের শক্তিতে দেশ এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে যে ছাত্রসংগঠন তৈরি তাদের মাধ্যমেই দেশ এগিয়ে যাবে।

বিদেশিদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এখন অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা দেখি মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু ১৫ আগস্টের পর তো আমরা বিচার চাইতে পারিনি। তবে কোনো বাধা আমাকে আটকাতে পারেনি। আমি মৃত্যুকে ভয় করিনি। মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরেছি। দেশে ফেরার পর সারাদেশ ঘুরেছি। দেখতে চেয়েছি বাবা-মার রক্ত নিয়ে তারা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পেরেছে কি না।

সরকারপ্রধান বলেন, পঁচাত্তরের পর যে ক্ষমতা ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে।

ড. ইউনূসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একটা ব্যাংকের এমডির জন্য বারবার আমাদের ওপর চাপ দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক আর একটা বড় দেশ। ইউনূসের কথা শুনে হিলারি ক্লিনটন বিশ্বব্যাংককে বলে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে দেখিয়ে দিয়েছি, বাঙালিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না।

সরকারপ্রধান বলেন, দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন জ্ঞানভিত্তিক দেশ। ছাত্রলীগকে স্মার্ট বাংলাদেশের কান্ডারি হওয়ার তাগিদ দেন সরকারপ্রধান।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গামাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে ছাত্রসমাবেশের আয়োজন করে ছাত্রলীগ। সমাবেশ শুরুর আগে তাদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ছাত্রদলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। আর আমরা ছাত্রদের হাতে খাতা-কলম তুলে দিয়েছিলাম। সেজন্যই বলি অশিক্ষিতদের হাতে বাংলাদেশ চলতে পারে না। দেশের উন্নতি হতে পারে না।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দুর্নীতিতে বাংলাদেশকে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল। আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা ও নির্যাতন করেছিল। তারা হাওয়া ভবন খুলে দেশটাকে লুটপাট ও জঙ্গির দেশ বানিয়েছিল। যার ফলে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিল। কারণ, তাদের ওপর জনগণ আস্থা রাখে না। অথচ যখনই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছে দেশের উন্নয়ন হয়েছে। কারণ, আমরা জনগণের জন্য কাজ করি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন বাঙালিরা। আমাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্র হাতে যুদ্ধে নামেন। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাই হয়েছিল মুক্তিকামী মানুষের মুক্তির জন্য।

সরকারপ্রধান বলেন, প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। এমনকি পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্রলীগই প্রথম প্রতিবাদ করে। এ ছাড়া ২০০৭ সালে ইমারজেন্সির সময় ছাত্রলীগই প্রথম প্রতিবাদ করেছে। সেই এক-এগারোর সময়েও ছাত্রলীগ কোনো আপস করেনি।

তিনি বলেন, তারুণ্যের শক্তিতে দেশ এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে যে ছাত্রসংগঠন তৈরি তাদের মাধ্যমেই দেশ এগিয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের পর আমি যখন দেশে ফিরি তখন কোনো বাধাই আমাকে আটকাতে পারেনি। আমি কাউকে ভয় পাইনি, বাবার স্বপ্ন পূরণ করবই।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গামাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে ছাত্রসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সমাবেশ শুরুর আগে তাদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।