টানা তিন ম্যাচ জিতে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিলো বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচে নয় রানের জয় পায় স্বাগতিক বাংলাদেশ।
তৌহিদ হৃদয়ের দৃঢ়চেতা ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ আজ ভালো একটা স্কোর দাঁড় করায়। এরপর বাংলাদেশের বোলাররা তাদের কাজটা করে গেছেন বেশ সহজেই।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ (৭ মে) আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে পাঁচ উউকেট হারিয়ে ১৬৫ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫৬ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে।
সাগরিকায় রান তাড়ায় শুরুটা জমাতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। জমাতে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা। ১৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা। আট বলে ৯ রান করে সাইফউদ্দিনের বলে থার্ড ম্যানে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচে পরিণত হন জয়লর্ড গাম্বি। দলীয় ২৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় দলটি। পাঁচ রান করা ব্রায়ান বেনেটকে ফিরতি ক্যাচে বিদায় করেন তানজিম সাকিব।
জিম্বাবুয়েকে তৃতীয় আঘাতটি দেন সাইফউদ্দিন। সাত রান করা ক্রেইগ আরভিনকে বোল্ড করেন তিনি। ৩৩ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে জিম্বাবুয়ে। আঘাত সামলে ওঠার আগেই হারায় অধিনায়ক সিকান্দার রাজাকে। মাত্র এক রান করে রিশাদ হোসেনের স্পিনে বিভ্রান্ত হওয়া রাজার ক্যাচ লুফে নেন উইকেটের পেছনে থাকা জাকের।।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে জিম্বাবুয়ে। তবু, একপ্রান্তে চেষ্টা চালিয়ে যান তাদিওয়ানাসে মারুমানি। ২৬ বলে ৩১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। মারুমানির প্রতিরোধ ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ। বাউন্ডারি লাইনে দারুণ এক ক্যাচ ধরেন সাইফউদ্দিন। মারুমানি ফেরার পর ক্রিজে এসে মারমুখী ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন জনাথন ক্যাম্পবেল। ১০ বলে ২১ রান করে ঝড়ের আভাস দিলেও তাকে থামিয়ে দেন তানভীর ইসলাম। ডিপ মিড উইকেট তার ক্যাচ নেন লিটন।
৯১ রানে সপ্তম ব্যাটার সাজঘরে ফিরলে জিম্বাবুয়ের কোনো আশাই বেঁচে থাকে না। তবুও, শেষ দিকে দারুণ লড়াই জমিয়ে তোলে তারা। কিন্তু জয়ের জন্য সেটা যথেষ্ট ছিল না। লড়াই জমিয়েও পরাজয়ের মুখ দেখে সফররতরা। ম্যাচের সঙ্গে হাতছাড়া হয় সিরিজও।
এদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিল লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম। কিন্তু চতুর্থ ওভারেই অস্থিরতায় ভুগে সাজঘরে ফেরেন লিটন। অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী জিম্বাবুয়ের বোলিং লাইন আপ লিটনকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কথা। কিন্তু তার বাজে ফর্ম ও আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি এতটাই প্রকট যে নিজে কি শট খেলছেন, সেটাই যেন বুঝতে পারছেন না। ব্লেসিং মুজারাবানির ওভারে পরপর দুই বল স্কুপ করার বৃথা চেষ্টা করেন লিটন। অফ স্টাম্পের বাইরে করা তৃতীয় বলটি আগের দুইবারের মতো স্কুপ করতে গিয়ে এবার বোল্ড হন তিনি। তিন ইনিংসে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১, ২৩ ও ১২ রান।
পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে ফিরে গিয়েছেন অধিনায়ক শান্তও। সিকান্দার রাজার বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি করেন ৪ বলে ৬ রান। ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ৪২ রান। এরপর ২২ বলে ২১ রান করে ফেরেন তানজীদ। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হাফ সেঞ্চুরিতে রাঙানোর পরের দুই ম্যাচে ব্যর্থ হলেন তিনি। ৯ ওভারে ৬০ রান তুলে টপ অর্ডার তিন ব্যাটারকে হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তবে হৃদয় ও জাকেরের দৃঢ়তায় ঘুরে দাঁড়ায় তারা। ৫৮ বলে ৮৭ রানের কার্যকর জুটি গড়েন দুজন।
৩৪ বলে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান হৃদয়। ১৯তম ওভারে মুজারাবানির বলে বোল্ড হওয়ার আগে খেলেন ৩ চার ও ২ ছয়ে ৩৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংস। জাকের অবশ্য হাফ সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন। তার ব্যাটে আসে ৩৪ বলে ৪৪ রানের ইনিংস। পরে চার বল করে খেলে মাহমুদউল্লাহ ৯ ও রিশাদ হোসেনের ৬ রানের সুবাদে দেড়শ ছাড়ানো পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের বোলারদের মধ্যে মুজারাবানি শিকার করেন সর্বোচ্চ তিন উইকেট। ফারাজ ও রাজা নেন একটি করে উইকেট।