আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে একমত হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের সরকারপ্রধান। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (৬ই সেপ্টেম্বর) দুপুরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুপুর ২টার বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতি দেন তারা। এসময় দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়।
যৌথ বিবৃতির আগে দুই নেতার একান্ত বৈঠক এবং দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে ৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়। যৌথ বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশ ও ভারত বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার চেতনায় দুই দেশ অনেকগুলো অমীমাংসিত ইস্যু সমাধান করেছে।
তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তিসহ অন্যান্য সকল অমীমাংসিত ইস্যুগুলো দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং নিকটতম প্রতিবেশী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৫০ বছরে একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব তৈরির মাধ্যমে দুই দেশ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ক্রমবর্ধমান বিভিন্ন ইস্যুতে কাজ করছে।
বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে এক সঙ্গে কাজ করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক মত হওয়ার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে এবং আমাদের দুই দেশ এবং আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে এক মত হয়েছি। যা দুই দেশের জন্যই নয় সমগ্র অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।
বাংলাদেশকে ভারতের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন ও বাণিজ্যিক অংশীদার বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়নের সাক্ষী হয়েছে। ঢাকা এই অঞ্চলে দিল্লির সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এবং আমাদের শক্তিশালী সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। গত কয়েক বছরে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমি বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের কোভিড মহামারি, সাম্প্রতিক বৈশ্বিক ঘটনাপ্রবাহ থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য দ্রুত বাড়ছে। আমরা আইটি, মহাকাশ এবং পারমাণবিক খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নিয়েও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।
এর আগে সকাল ৯টায় রাইসিনা হিলে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে যান সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তাকে আনুষ্ঠানিক অভ্যার্থনা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) চারদিনের সফরে ভারতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন দুপুরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইটে নয়াদিল্লি পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তাকে লালগালিচা অভ্যর্থনা দেওয়া হয়। উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ভারতের রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা বিক্রম, ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান ও বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।