ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বর্তমানে দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ সমর্থিত সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি)।
গাজায় এখন দুর্ভিক্ষ চলছে উল্লেখ করে বৈশ্বিক এ সংস্থার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘সর্বশেষ তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে, গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ অংশ দুর্ভিক্ষের সীমায় পৌঁছেছে এবং গাজা নগরীতে মারাত্মক অপুষ্টি দেখা দিয়েছে।’
গাজায় এখন দুর্ভিক্ষ চলছে উল্লেখ করে বৈশ্বিক এ সংস্থার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘সর্বশেষ তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে, গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ অংশ দুর্ভিক্ষের সীমায় পৌঁছেছে এবং গাজা নগরীতে মারাত্মক অপুষ্টি দেখা দিয়েছে।’
ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) এর সতর্কতায় বলা হয়েছে, “ক্রমবর্ধমান প্রমাণ দেখায় যে ব্যাপক অনাহার, অপুষ্টি এবং রোগ ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি বর্তমানে গাজা উপত্যকায় দেখা দিচ্ছে “
এই প্রথমবারের মতো আইপিসি জানিয়েছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ চলছে। অবশ্য এর আগে সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, অঞ্চলটি দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। প্রায় দুই বছরের যুদ্ধের সময়, ইসরায়েল বারবার গাজায় পৌঁছানো ত্রাণ ট্রাক সীমিত করেছে, কখনো কখনো ত্রাণ সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।
গাজায় এমন সময় দুর্ভিক্ষের সতর্কতা জারি করা হয়েছে যখন গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
আইপিসি- এর বার্তায় দুর্ভিক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে এমন একটি পরিস্থিতি হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে যেখানে কমপক্ষে ২০ শতাংশ মানুষ চরম খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হয়, তিনজনের মধ্যে একজন শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভোগে এবং প্রতি ১০ হাজার জনের মধ্যে দুজন প্রতিদিন অনাহারজনিত কারণে মারা যায়।
আইপিসির সতর্কতায় বলা হয়েছে, গাজার বেশিরভাগ এলাকায় “প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন ব্যক্তি দিনের পর দিন খাবার ছাড়াই কাটাচ্ছেন।”
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ২১ লাখ মানুষের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ এলাকায় খাদ্যগ্রহণের দিক থেকে দুর্ভিক্ষের মাত্রা অতিক্রম করেছে। এ ছাড়া গাজা নগরীতে তীব্র অপুষ্টির মাত্রাও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আইপিসির সতর্কবার্তার আগে ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির প্রধান ডেভিড মিলিব্যান্ড এক বিবৃতিতে বলেছেন, দুর্ভিক্ষের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সবসময় বাস্তবতার পেছনে পড়ে থাকে।
আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনই শিশু। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে সংঘাত শুরুর পর অপুষ্টিজনিত কারণে এখন পর্যন্ত ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৮৮ জনই শিশু। বর্তমানে প্রতিদিন ২০০-র মতো ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করলেও জাতিসংঘ বলছে, প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০০টি ট্রাক প্রয়োজন গাজার পরিস্থিতি মোকাবিলায়। সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলোকে স্বাগত জানালেও তারা মনে করছে, এখন পর্যন্ত পাঠানো ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।