ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে যে রাজনৈতিক সহিংস বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, সেটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বুধবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ে সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ উদ্বেগ জানান।

পরে রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন, সম্প্রতি মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে যে রাজনৈতিক সহিংস বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, সেটি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছি।

সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশের জন্য সহিংসতা হ্রাসের পাশাপাশি কোনো পূর্বশর্ত ছাড়া সংলাপের সুযোগ খুঁজতে সব রাজনৈতিক দলকে আমরা আহ্বান জানিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, এছাড়া ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সহিংসতা রাজনৈতিক বক্তব্যের বিষয়টিও তুলে ধরেছি। যেটা কয়েকদিন আগে আমাদের মুখ্য উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলও বলেছেন। আমাদের ও আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য এ বক্তব্য কতটা উদ্বেগজনক, সেই কথাও বলেছি।

এদিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর চিঠি নিয়ে সচিবালয়ে যান পিটার হাস। চিঠিটি ওবায়দুল কাদেরকে দেন তিনি। এই চিঠিতে শর্তহীন রাজনৈতিক সংলাপের তাগিদ রয়েছে।

এর আগে, গত ৬ নভেম্বর বাঁশখালীর এক জনসভায় আওয়ামী লীগের নেতা ও চট্টগ্রামের বাঁশখালির চম্বল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে প্রকাশ্যে পেটানোর হুমকি দেন এবং অশালীন মন্তব্য করেন। যা ৮ নভেম্বর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার বক্তব্য নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি গিয়ে ঠেকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়েও।

এ নিয়ে গত ৯ নভেম্বর রাতে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সভা শেষে গণভবন গেটে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নিয়ে মন্তব্য করায় মুজিবুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে সহিংস বক্তব্যে পিটার হাসের উদ্বেগ

আওয়ামী লীগ নেতার ওই বক্তব্যকে ‘শিষ্টাচার বহির্ভূত’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে শিষ্টাচার বহির্ভূত, অশোভন যে বক্তব্য দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। তা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালির চম্বল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের ব্যবস্থা আমরা নেব। এ ধরনের শিষ্টাচার বহিভূত আচরণ করা মোটেও উচিত নয়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি কূটনীতিক হোক, আর যেই হোক, তার বিরুদ্ধে কোনো শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য হতে পারে না।

ওবায়দুল কাদের জানান, দলীয় প্রধানের পক্ষ থেকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।