দ্রুতগতির উড়ালসড়ক ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে দেশবাসীর জন্য নতুন উপহার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ফলে রাজধানীর যানজট কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে একথা বলেন শেখ হাসিনা। এ সময় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন সরকারপ্রধান।

এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন সরকারপ্রধান। যদিও এর আগে কাওলা অংশে ফলক উন্মোচন করে রাজধানীর এই মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠকন্যা শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান।

প্রধানমন্ত্রী কাওলা অংশ দিয়ে প্রথম টিকেট কেটে এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশ করেন। কাওলা থেকে ১৪ মিনিটে ফার্মগেটে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে বিকেল ৪টার দিকে সমাবেশস্থল আগারগাঁও বাণিজ্যমেলার মাঠে পৌঁছান।

সমাবেশে শেখ হাসিনা বলেন, রাজধানীর সঙ্গে সারা বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের একটি নতুন উপহার আজকে আপনাদের জন্য দিয়ে যাচ্ছি। যেটি যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি নতুন মাইলফলক। আজ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাওলার দক্ষিণ প্রান্ত থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করা হয়েছে। আপনাদের জন্য এই উপহার দিচ্ছি।

এটি যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি ঢাকার যানজট নিরসনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে। মানুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট হবে না।

এর আগে বেলা সাড়ে তিনটায় রাজধানীর কাওলায় বহুল কাঙ্ক্ষিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে টিকিট কেটে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ফার্মগেটে নামেন সরকারপ্রধান।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠকন্যা শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে যোগ দিয়েছেন সরকারের প্রায় সব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা। এছাড়া সরকারের সচিব ও বিভিন্ন পর্যায়ের আমলারাও এই সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। একই সঙ্গে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক সাখাওয়াত হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা যোগ দেন।

সরকারের এই অর্জনকে স্মরণীয় করে রাখতে সুধী সমাবেশে যোগ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও এর প্রতিটি ভ্রাতৃপ্রতীম ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আগামীকাল রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ৬০ কিলোমিটার গতির একটি গাড়ি মাত্র ১০ মিনিটে কাওলা থেকে ফার্মগেট পৌঁছাতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন প্রায় ৮০ হাজার যানবাহন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যেতে পারবে। এক্সপ্রেসওয়েটি রাজধানীর যানজট এবং যাতায়াতের খরচ অনেকাংশে কমিয়ে দেবে। এটি সম্পূর্ণভাবে নির্মাণ হলে রাজধানীর কাওলা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে যাওয়া যাবে অল্প সময়ে।

এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কিলোমিটার। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে রেললাইন ধরে তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কাছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে এই উড়ালসড়ক। আপাতত ফার্মগেট পর্যন্ত চালু হয়েছে। বাকি অংশের কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ২০১১ সালে নেওয়া এই প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।