দেশের পরিস্থিতি দিনদিন ঘোলাটে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। আজ মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান স্পষ্ট নয়। দ্রুত নির্বাচনের বিষয়ে জাতিকে জানানোর আহ্বানও জানান তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র কাঠামোর কী কী সংস্কার করতে চায় এবং সেটা করতে কতদিন লাগবে, কোনো ছলচাতুরি ছাড়াই তা স্পষ্ট করে অবিলম্বে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করার আহ্বান জানান তিনি।

মির্জা আব্বাস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, জাতিকে অন্ধকারে রেখে আপনারা যা খুশি তাই করবেন, আমরা তো সেটা মেনে নিতে পারব না। সুতরাং জাতিকে ধোঁয়াশায় রাখবেন না। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন গত ১৬ বছরের বিনা ভোটের সরকারকে মানেনি, এখন এই সরকারকেও দীর্ঘদিন মানবে না।

সংবিধান নতুন করে লেখার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, কারো কারো কথা শুনে মনে হচ্ছে যে বাংলাদেশের সংবিধানটা হচ্ছে রাফখাতা। সংবিধান রাফ খাতা নয়, যখন তখন কিছু করা যাবে না। এটাকে সংশোধন করেন, বহুবার হয়েছে। অনেকে বলেন সংবিধান ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে। যাদের বয়স হওয়ার পরও মুক্তিযুদ্ধে যাননি তারা এসব কথা বলেন। সংবিধান সংশোধন কিংবা পুনর্লিখন করতে হলে, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছেন, যারা স্টেকহোল্ডার রয়েছেন-তাদের সাথে আলোচনা করে তা করতে হবে।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে জোরেসোরে এই দ্বিতীয় স্বাধীনতার কথা বলা হচ্ছে। এটা কীসের দ্বিতীয় স্বাধীনতা? এই কথাটার আবিষ্কার করলো কে? কোন গোষ্ঠী আবিষ্কার করলো। কেন করলো? আমরা স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছি, ফ্যাসিস্টমুক্ত হয়েছি। এখন দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কী বোঝাতে চান আপনারা? আমার কাছে এর ব্যাখ্যা হচ্ছে-আপনারা কি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করতে চান? মনে রাখতে হবে, বাবার আগে ছেলে হাঁটলে সেই দেশ- জাতি শেষ হয়ে যায়।

অনুষ্ঠানে আলোচ্য বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন।

প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি কালাম ফয়েজীর সভাপতিত্বে এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম কলিমের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।