প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের পরিকল্পিত পদক্ষেপে দেশে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প, সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে গড়ে উঠেছে। হাইটেক শিল্পে এখন রপ্তানিকারক হিসেবে দেশ আত্মপ্রকাশ করেছে। চট্টগ্রামে শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের উদ্বোধন করে এসব বলেন তিনি। বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন বিদ্যুতে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বুধবার (৬ই জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন তিনি।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোবাবেলায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার কাজ করছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর নির্মাণ করা হয়েছে। এই ইনকিউবেটর নতুন নতুন আইডিয়া বাস্তবায়নের ক্ষেত্র তৈরি করবে।
চুয়েটের এই আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর থেকে উদ্ভাবিত হবে নতুন নতুন ধারণা । সেসব ধারণাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার ক্ষেত্র হবে এই ইনকিউবেটর। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরির মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে এই ইনকিউবেটর ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে আরও যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রকল্পের আওতায় চুয়েট ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রায় ৫ একর (৪ দশমিক ৭ একর) জমির ওপর ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১০ তলাবিশিষ্ট একটি ইনকিউবেশন ভবন এবং ৩৬ হাজার বর্গফুটের ৬ তলাবিশিষ্ট একটি মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ইনকিউবেশন ভবনের মধ্যে রয়েছে- স্টার্টআপ জোন, আইডিয়া/ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক জোন, ব্রেইনস্ট্রর্মিং জোন, ই-লাইব্রেরি, ডাটা সেন্টার, রিসার্চ ল্যাব, বঙ্গবন্ধু কর্নার, এক্সিবিশন/প্রদর্শনী সেন্টার, ভিডিও কনফারেন্সিং কক্ষ, সভাকক্ষ প্রভৃতি।
উদ্যোক্তা ও গবেষকদের কাজের সুবিধার্থে একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (অও) ল্যাব, একটি মেশিন লার্নিং ল্যাব, একটি বিগ ডাটা ল্যাব, অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকবোন, একটি সাব-স্টেশন ও সোলার প্যানেল রয়েছে। এছাড়া ব্যাংক ও আইটি ফার্মের জন্য পৃথক কর্নার, অত্যাধুনিক সাইবার ক্যাফে, ফুড কোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া, রিক্রিয়েশন জোন, মেকার স্পেস, ডিসপ্লে জোন, প্রেস/মিডিয়া কাভারেজ জোন, নিজস্ব পার্কিং সুবিধা প্রভৃতি।
অন্যদিকে, মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবনে ২৫০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন সুসজ্জিত অডিটোরিয়াম এবং ৩০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন পৃথক ৮টি কম্পিউটার ল্যাব কাম সেমিনার কক্ষ রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি ২০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ৪ তলাবিশিষ্ট পৃথক দুটি (একটি নারী ও একটি পুরুষ) আবাসিক ডরমিটরি ভবন নির্মিত হয়েছে। প্রতিটি ডরমিটরিতে ৪০টি কক্ষ রয়েছে। এছাড়া দুটি মিনি সুপার কম্পিউটার সম্বলিত অত্যাধুনিক গবেষণা ল্যাব শিগগিরই স্থাপিত হতে যাচ্ছে চুয়েটে।