দেশের প্রায় সবক’টি নদ-নদীর পানি কমেছে। এতে সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের বানভাসি মানুষের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফেরা অব্যাহত রয়েছে। কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটেও উন্নতি হয়েছে চলমান বন্যা পরিস্থিতির। তবে দুর্গত এলাকায় খাদ্যসহ নানা ধরণের সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা পরবর্তী পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে সরকারি সহায়তা চাইছে বানভাসিরা।
দু’মাসের ব্যবধানে কয়েকদফা বন্যার শিকার সিলেটের ৭ উপজেলায় এখন কেবলই ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। গেলো ৫ দিন জেলার প্রধান দু’টি নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি কমা অব্যাহত রয়েছে। ফলে সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জকিগঞ্জের উঁচু এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। তবে বিধ্বস্ত ঘরবাড়িতে ফিরেই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বানভাসি মানুষদের।
সুনামগঞ্জের সুরমা, যাদুকাটা, পাটলাই, রক্তিসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি কমা অব্যাহত রয়েছে। জেলার নিম্নাঞ্চলে কিছু জলমগ্ন থাকলেও বেশিরভাগ এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। কিন্তু বাড়ি ফেরা বানভাসিরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারি সহায়তা চাইছেন তারা।
এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ত্রাণ বিতরণ করেছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। এর আগে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও ত্রাণ কার্যক্রমসহ সার্বিক বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন তারা।
মৌলভীবাজারে বন্যার পানি ধীরগতিতে নামছে। বন্যার্তদের মাঝে ঈদ সামগ্রী ও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। পানি কমে যাওয়ায় নেত্রকোণার ১০ উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে গত দু’দিনে প্রায় এক লাখ মানুষ বাড়ি ফিরেছে। তবে উব্দাখালি নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে ও ধনু নদের পানি খালিয়াজুরি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।
কুড়িগ্রামে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি কমে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কমেছে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানিও। জেলায় প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমির পাট, ভুট্টা ও সবজিসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়েছে। লালমনিরহাটে বন্যায় নষ্ট হয়েছে ৪শ’ বিঘা জমির ফসল। তিস্তাসহ অন্যান্য নদীর পানি কমতে থাকায় জেলার চরগোকুন্ডা, রাজপুর, খুনিয়াগাছ, মহিষখোচা, ডাউয়াবাড়ী ও সিন্দুর্ণা এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙ্গন।