দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার উপায় বের করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যথায় ব্যবসায়ীরা নিজেদের পণ্যের বাজার হারাবে বলেও জানান তিনি। আজ (শনিবার) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। জিনিসপত্রের দাম কমাতে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চান তিনি। কোন হতাশা নয়, ব্যবসায়ীদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

ব্যবসা ও বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের উদারতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাল ফিতার দৌরাত্ম্য সরিয়ে দেওয়া হবে। (যে বিষয়ে) সিদ্ধান্ত হবে, সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়নও হবে। বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিনিয়োগ ও ব্যবসার পরিবেশের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। সেটি আরও সংস্কার ও ব্যবসাবান্ধব করা হবে। লাল ফিতার দৌরাত্ম্য সরিয়ে দেওয়া হবে। (যে বিষয়ে) সিদ্ধান্ত হবে, সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়ন হবে’।

সরকার প্রধান বলেন, ‘স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশ হলে আমাদের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এজন্য আমি দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মানসিকতা নিয়ে এগোনোর অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি কোনো হতাশা শুনতে চাই না। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করবো’।

No description available.

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক সময় বাংলাদেশ বন্যা-খরাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ হিসেবে পরিচিত পেত। এখন কিন্তু সে অবস্থা নেই। এখন বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। গত ১৪ বছরে আমরা বাংলাদেশের ব্যাপক পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছি। এমনকি করোনাকালেও বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমরা যে পারি, সেটা প্রমাণ করেছি পদ্মা সেতু নিজ অর্থায়নে করে’।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। দেশে এখন বেসরকারী বিনিয়োগকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ধরা হয়েছে। বেসরকারীখাত নিয়ে তিনি বলেন, এই খাতকে গুরুত্ব না দিলে এত উন্নয়ন সম্ভব হত না। কোভিডে পুরো বিশ্ব থমকে গেলেও আমাদের অর্থনীতি থামেনি। সরকার প্রধান বলেন, ‘২০৪১ রুপকল্প’ বাস্তবায়ন করা হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না থাকলে আরও দুই তিন শতাংশ দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনা যেত।

সামিটে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাত নিয়ে ১৭টি সেমিনার ও ৩টি প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। দুই শতাধিক আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, চীন, ভুটান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ১২টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সিইও এবং ২০০ এর বেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, বিশ্বের ১৭টি দেশের ব্যবসায়ী নেতারা সম্মেলনে অংশ নেন।

তিনদিনব্যাপী এই সম্মেলন ১৩ই মার্চ পর্যন্ত চলবে।