বিয়ে ও প্রতারণার ঘটনায় করা ধর্ষণ মামলায় পাবনা-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু ওরফে ফারুককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আজ (বুধবার) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক বেগম সামছুন্নাহারের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এস এম লুৎফর রহমান জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত বছর মামলা দায়ের করা হয়। ট্রাইব্যুনাল মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের আদেশ দিয়েছিলেন। আজ পরোয়ানা সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল।
এর আগে, গত বছর ২২শে এপ্রিল শিক্ষানবিশ এক আইনজীবী আদালতে মামলা দায়ের করেন। ট্রাইব্যুনাল বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের আদেশ দেন। অভিযোগ তদন্তের পর ঢাকা মহানগর উত্তর পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম ট্রাইব্যুনালে গত ৫ই জানুয়ারি অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার প্রতিবেদন দাখিল করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০০ সালের ডিসেম্বরে বাদীর প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর তার আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে পুনরায় বিয়ের জন্য চাপ দিলে একপর্যায়ে ২০০১ সালের শেষের দিকে বাদীর চাচার মাধ্যমে আসামির সাথে পরিচয় হয়। আসামি তাকে জানায়, তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা গেছেন। সামাজিক নির্ভরতার ও একাকীত্বের অবসানে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হন বাদী। ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর আসামির সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
এর আগে সন্তান গর্ভে আসার পর আসামি বাচ্চা নষ্ট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাদী বাচ্চা নষ্ট করেননি। পরে, ২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারি তাদের একটি কন্যা সন্তান হওয়ার পর আসামি বাদীর বাসায় আসা কমিয়ে দেন। ইতোমধ্যে বাদীর নামে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার কথা বলে তার বাবার কাছ থেকে নেওয়া ১০ লাখ টাকা, জমানো আট লাখ টাকা ও তার ১৫ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নেয় কিন্তু এখনো ফ্ল্যাট কিনে দেননি এবং টাকাও ফেরত দেয়নি।
এক পর্যায়ে আসামি বাদীর বাসায় আসা বন্ধ করে দিলে বাদী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন আসামির প্রথম পক্ষের স্ত্রী জীবিত। ওই ঘরে কন্যা সন্তান আছে ও স্ত্রীর সংসারে বসবাস করেন। আরো জানতে পারেন, নাম ও পরিয়ের মিথ্যা তথ্য দিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্যই বাদীকে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন। আসামি কয়েকবার নিজে ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দ্বারা তাকে হত্যা করার উদ্দেশে আক্রমণ করেন। এক পর্যায়ে আসামি বাদীর সাথে বিবাহ, গর্ভপাত ও ঔরসের কন্যার পিতৃ পরিচয়কে সরাসরি অস্বীকার করেন। মামলার তদন্তে ডিএনএ পরীক্ষায় বাদীর কন্যা সন্তানটি বাদীর গর্ভজাত সন্তান ও আসামি আজিজুল হক আরজু তার জৈবিক পিতা বলে মতামত এসেছে।
