ভাষাসৈনিক, বর্ষিয়ান সাংবাদিক, কবি ও গীতিকার কে জি মুস্তাফা আর নেই। রোববার (৮ই মে) রাত আটটার দিকে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৬ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি ও হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি কে জি মুস্তাফাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ছিলেন।
সোমবার (৯ই মে) বাদ জোহর জাতীয় প্রেসক্লাবে কে জি মোস্তফার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর মৃত্যুতে সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কে জি মোস্তফার জন্ম ১৯৩৭ সালের পহেলা জুলাই নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। ১৯৬০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। দৈনিক ইত্তেহাদে ১৯৫৮ সালে শিক্ষানবীস হিসেবে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। ১৯৭৬ সালে তিনি বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারভুক্ত হন এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে সিনিয়র সম্পাদক (যুগ্ম সচিব পদমর্যাদা) হিসেবে অবসর নেন।
কে জি মোস্তফার লেখালেখি শুরু ছাত্রজীবনেই। ওই সময় থেকেই বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকীতে তার লেখা কবিতা প্রকাশিত হয়ে আসছে। এক পর্যায়ে গান লিখতে শুরু করেন এবং তার লেখা বেশ কিছু গান অসামান্য জনপ্রিয়তা পায়। তার লেখা গানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে তালাত মাহমুদের কণ্ঠে ‘তোমারে লেগেছে এতো যে ভালো চাঁদ বুঝি তা জানে’ এবং মাহমুদুন্নবীর কণ্ঠে ‘আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন’। প্রথম গানটি এহতেশাম পরিচালিত ‘রাজধানীর বুকে’ এবং দ্বিতীয় গানটি অশোক ঘোষ পরিচালিত ‘নাচের পুতুল’ সিনেমায় ব্যবহার করা হয়েছে। দু’টি গানেরই সুর করেছেন রবিন ঘোষ।
এক সময় নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালনার দিকেও ঝুঁকেছিলেন কে জি মোস্তফা। ‘মায়ার সংসার’, ‘অধিকার’ ও ‘গলি থেকে রাজপথ’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সঙ্গীত বিভাগ কর্তৃক পদক ‘দেশবরেণ্য গীতিকার’ পদকসহ আরো বহু পদকে ভূষিত হয়েছেন কে জি মোস্তফা।