নিউইয়র্কে বিমানবন্দরে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিনিধি দলের সদস্য জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করে লাঞ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের-নেতাকর্মীরা। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৮ নম্বর টার্মিনালে এ ঘটনা ঘটে।
এ অভিযোগে মিজানুর রহমান চৌধুরী নামের একজন আওয়ামী লীগ কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। স্থানীয় সময় সোমবার রাতে জ্যাকসন হাইটস এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরও বেশ কয়েকজনকে পুলিশ খুঁজছে। তাদের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সময় সোমবার বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টাসহ প্রতিনিধি দলের সদস্যদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৮ নম্বর টার্মিনালে অবতরণ করে। এ সময় টার্মিনালের বাইরের পার্কিং লটে প্রচুর সংখ্যক যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীরা টার্মিনাল থেকে বর হয়ে গাড়িতে ওঠার সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মারে। এ ঘটনার প্রায় ৬ ঘণ্টা পর জ্যাকসন হাইটস এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ কর্মী মিজানুর রহমান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমানবন্দর থেকে লাগেজ হাতে রাস্তা পার হচ্ছিলেন আখতার হোসেন। তার পাশেই ছিলেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা এবং তার একটু সামনেই ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির।
এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আক্তার হোসেনকে উদ্দেশ্য করে ‘স্বৈরাচারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে তার ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন।
এরপর আরেক ভিডিওতে আখতার হোসেনকে নিউইয়র্কে এনসিপির নেতাকর্মীদের সঙ্গ নিয়ে ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।
আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা সেই প্রজন্ম যারা হাসিনার গুলির সামনে মাথা নত করিনি, ভাঙা ডিমে কিছু যায় আসে না। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ একটা সন্ত্রাসী সংগঠন।’
এদিকে আখতার হোসেনকে হেনস্তার প্রতিবাদে তাসনিম জারা ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আজ যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পর আমাদের দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেনের ওপর হামলা হয়েছে। তাকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়া হয়েছে, গালিগালাজ করা হয়েছে। এটি ব্যক্তি আখতার হোসেনের ওপর আক্রমণ নয়, তার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে করা হয়েছে। কারণ তিনি প্রতিনিধিত্ব করেন সেই দলকে, যে দল ফ্যাসিবাদের কাঠামো ভেঙে দিতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই হামলা স্পষ্ট করে দেয়, পরাজিত শক্তির ভয় ও হতাশা কতটা গভীর। আমি নিশ্চিত, এই আক্রমণ আখতার হোসেনকে এক বিন্দুও দুর্বল করবে না; বরং তার অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ় করবে।’