গেল কিছুদিন ধরে যে আশংকা করা হচ্ছিল সেটিই সত্যে পরিণত হলো। তিন বছর আগের মতো আবারও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্থগিত হলো নিউইয়র্কের বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন। ২৭ হাজার ৫১০ ভোটের এ নির্বাচন হবার কথা ছিল ১৪ নভেম্বর রবিবার। সেভাবেই ৫টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিল। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু ১২ নভেম্বর শুক্রবার নিউইয়র্ক স্টেট সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় থমকে গেল নির্বাচনের সকল কার্যক্রম।

এর আগে ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবরও একইভাবে স্থগিত হয়েছিল এই নির্বাচন। তবে এবারের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির ব্যাপারটিও অপ্রত্যাশিত ছিল না। সর্বত্র জল্পনা-কল্পনা চলছিল যে আবারো থামিয়ে দেয়া হবে নির্বাচনের আয়োজনকে। এরফলে নির্বাচন কমিশনের কেউ কেউ খুশি হলেও দুই প্যানেল এবং স্বতন্ত্র সহ ৩৮ প্রার্থীর সকলেই চরমভাবে ক্ষুব্ধ। বিপুল অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি মূল্যবান কর্মঘণ্টারও অপচয় ঘটলো বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন।

সুপ্রিম কোর্টে নিরু এস নীরা নামক এক প্রবাসীর দায়েরকৃত (ইনডেক্স নম্বর ৭২৪৫০২/২০২১) মামলার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সোসাইটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল আহমেদ জনিসহ সকলকে ২৪ নভেম্বরের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনমূলক জবাব দিতে বলা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে শুনানীর দিন ধার্য করা হয়েছে ২ ডিসেম্বর।

শেষ মুহূর্তে আবারও নির্বাচন স্থগিত হওয়ার জন্যে কে বা কারা দায়ী তা চিহ্নিত করার দাবি উঠেছে কমিউনিটিতে। কারণ, ৪৬ বছরের পুরনো এই সংগঠনে এবারই প্রথম সবচেয়ে বেশি প্রবাসী নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে সদস্য ও ভোটার হয়েছেন। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে সকলে সদস্য ফরম পূরণ করেন দু’বছর মেয়াদি কার্যকরী কমিটির নির্বাচনে ভোট প্রদানের অভিপ্রায়ে। নির্বাচন হবার কথা ছিল ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর রবিবার। তার ঠিক দুদিন আগে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ এসেছিল। সে আবেদন করেছিলেন নির্বাচনে অংশগ্রহণের মনোনয়নপত্র বাতিলের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে দুই সদস্য প্রার্থী আলী আকবর বাপ্পী এবং জেড আর চৌধুরী। সেই মামলার জট খুলে গত বছরের মার্চে।

স্থগিতাদেশের কপির সত্যতা নিয়েও প্রশ্নের উদ্রেক করায় সোসাইটির কর্মকর্তারা তাদের অ্যাটর্নির মাধ্যমে শনিবার দুপুরে (বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ১২টায়) সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নেবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, এ নির্বাচনে ‘নয়ন-আলী’ এবং ‘রব-রুহল’ প্যানেল ছাড়াও সভাপতি ও সেক্রেটারি পদে একজন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। সভাপতি পদে লড়ছিলেন কাজী আশরাফ হোসেন নয়, মো. রব মিয়া এবং জয়নুল আবেদীন এবং সেক্রেটারি পদেও তিন প্রার্থী মোহাম্মদ আলী, রুহুল আমিন সিদ্দিকী এবং আব্দুল মোমেন সোহেল।

বার বার একটি বৃহৎ সংগঠনের নির্বাচন আদালতে গড়িয়ে আটকে দেয়ায় কমিউনিটিতে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে। অন্যান্য কমিউনিটির লোকজনও বারবার নির্বাচন আটকানোর ফন্দি ফিকির নিয়ে হাসাহাসি করছেন।