জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মঙ্গলবার ভাষণ দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি। তিনি তার লম্বা বক্তৃতায় রাশিয়াকে সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসের সঙ্গে তুলনা করেছেন ।
তাছাড়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন জেলেনস্কি। তিনি রাশিয়াকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন।
গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, জেলেনস্কি তার বক্তৃতায় বলেছেন, আমি গতকাল বুচা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। বুচায় এমন কোনো অপরাধ নেই যা সংঘটিত করেনি রাশিয়া। এই অঞ্চলে একটি পরিবারের সকল সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে। শিশুদের সামনে নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে। মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।
জেলেনস্কি দাবি করেছেন, রাস্তায় মানুষকে গুলি করা হয়েছে, বাড়িতে গুলি করা হয়েছে, মানুষকে ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও দাবি করেছেন, বিনোদন পাওয়ার জন্য রুশ সেনারা সাধারণ মানুষকে যুদ্ধ ট্যাংকের নিচে পিষে হত্যা করেছে।
জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার কার্যক্রম সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসের কার্যক্রমের সঙ্গে মিল আছে।
জেলেনস্কি নিরাপত্তা পরিষদে আরও জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন তার ব্যক্তিগত ক্ষোভ ইউক্রেনের বাইরেও নিয়ে যেতে চান।
তাছাড়া জাতিসংঘের সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি প্রশ্ন করেছেন জাতিসংঘের কাজ হলো নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু তারা এখন কোথায়?
এ ব্যাপারে জেলেনস্কি বলেন, শান্তি কোথায়? কোথায় সেই নিশ্চয়তাগুলো যেই নিশ্চয়তা জাতিসংঘের দেওয়ার কথা।
জেলেনস্কি তার বক্তৃতায় আরও জানিয়েছেন, শুধুমাত্র বুচায় রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করেনি। অন্য অঞ্চলগুলোতেও তারা যে নৃশংসতা চালিয়েছে সেগুলো হয়ত শীগ্রই বিশ্ববাসীর সামনে আসবে।
তাছাড়া নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া ভাষণেই রাশিয়াকে নিরাপত্তা পরিষদ থেকে বের করে দেওয়ার দাবি জানান জেলেনস্কি।
তিনি তার বক্তব্যে জানান, রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো পাওয়ারের সুযোগের ব্যবহার করছে। তারা যা খুশি তাই করছে। কিন্তু ভেটো পাওয়ারের কারণে কোনো শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে না।
তাছাড়া জেলেনস্কি তার বক্তব্যে জানিয়েছেন, রাশিয়া বুচায় যে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করেছে সেগুলো এখন তারা অস্বীকার করবে।
কিন্তু জেলেনস্কি বলেছেন, এটি ২০২২ সাল। আমাদের কাছে শক্ত প্রমাণ আছে। স্যাটেলাইটের ছবি আছে। আমরা সঠিক ও স্বচ্ছ তদন্ত করতে পারব।
জেলেনস্কি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আরও জানিয়েছেন, রাশিয়া বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট তৈরি করতে চাচ্ছে। তাদের কারণে খাদ্যকষ্টে ভুগবে এশিয়া ও আফ্রিকার মানুষ।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি