বিএনপি নির্বাচনবিরোধী অবস্থান থেকে নির্বাচনকে ভোটারশূন্য করার নানামুখী ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ (বৃহষ্পতিবার) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণই প্রমাণ করে নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। বিএনপি ও তাদের জোটে থাকা রাজনৈতিক দলগুলো অংশ না নিলেও এসব নির্বাচনে ৫০ শতাংশের বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। জনগণ বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি জনগণের মুখোমুখি হতে ভয় পায়। তারা তাদের জনসমর্থনহীনতার ভীতি থেকে নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও অযৌক্তিক অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলার জনগণ বিএনপিকে বিশ্বাস করে না। তাদের কোনো চক্রান্তই সফল হবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু পরিবেশেই অনুষ্ঠিত হবে। জনগণের রায়েই সরকার পরিবর্তন হবে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এদেশে ভোটারবিহীন নির্বাচনের প্রবক্তা বিএনপি। তথাকথিত হ্যাঁ/না ভোটের মাধ্যমে সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান শাসনতান্ত্রিক বৈধতা অর্জনের পাঁয়তারা চালান। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করেছিলেন।

‘তাদের সময় নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার কোনো সুযোগ ছিল না। কারণ কমিশন ছিল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অধীন। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ কোনো ক্ষমতাই ছিল না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছেন। বিশেষত সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে আরও সুদৃঢ় করতে নির্বাচন কশিমন গঠনে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করেছেন।’

বিএনপির শাসনামলে কোনো প্রতিষ্ঠান স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয়নি দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তাদের সময় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ছিল একটি নখ-দন্তহীন বাঘ। বিচার বিভাগ পরিচালিত হতো বিএনপির মতাদর্শ অনুসরণ করে। দলীয় ও বিতর্কিত লোকদের নিয়োগ দিয়ে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশনসহ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কলঙ্কিত করেছিল।’

ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘বিএনপির সময় কোনো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার অপচেষ্টায় তারা গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। বিএনপি ক্ষমতা দখল করে সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার পাশাপাশি রাষ্ট্রব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দিয়েছিল।

‘আবারও তারা ক্ষমতায় এলে সেই ধ্বংসাত্মক রাজনীতির পুনরাবৃত্তি ঘটাবে। কারণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার প্রতি ঐতিহ্যগতভাবেই বিএনপির কোনো আস্থা নেই।’