জাতীয় নির্বাচনের পর নিষেধাজ্ঞা আসা না আসা নিয়ে এখনই অস্থির হওয়ার বা ভয়ের কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ডিকাব) সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আমরা সবচেয়ে খারাপটা কেন চিন্তা করব? আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি কথা; প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন। নির্বাচন কমিশন সেই লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, কাজ করছে। আশা করছি, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সেজন্য আমরা সবাই কাজ করছি।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, নির্বাচন ভালো হবে। আর নির্বাচনের সময় যদি কোনো সমস্যা হয়, তখন তা আমরা দেখব। আমরা এই মুহূর্তে মনে করছি না, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। যদি ওরকম পরিস্থিতি আসে, তখন আমরা নিশ্চয়ই পদক্ষেপ গ্রহণ করব। আগে থেকে আমরা কেন চিন্তা করব?
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আমরা আশা করছি, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। কোনো পার্টিকুলার (নির্দিষ্ট) দেশ যদি মনে করে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি এবং নিষেধাজ্ঞার ইস্যু আসে তখন আমরা সেটা তুলব। এটার জন্য এখনই আমরা অস্থির হয়ে যাওয়া বা প্যানিক (ভীতি) সৃষ্টির কোনো কারণ দেখছি না।
তিনি বলেন, সমস্যা টুকটাক থাকবে এটা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। কোন দেশ কি ভাবল বা কি করল সেটা নিয়ে আসলে এতটা দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। আমরা চাই না, নির্বাচনে সংঘাত হোক। তারপরও অতীত অভিজ্ঞাতায় আমরা দেখেছি, স্থানীয়ভাবে সংঘাত হতে। এটাকে কীভাবে কমিয়ে আনা যায় সেই চেষ্টা থাকবে।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটা দেশে তাদের সার্বভৌমত্বের ব্যাপার রয়েছে। আমরা সবাইকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য স্বাগত জানিয়েছি। তারা নির্বাচন প্রক্রিয়া দেখবে, সবকিছু দেখবে। কমনওয়েলথ থেকে বড় একটা টিম আসছে। শহরে এনডিআই, আইআরআই টিম রয়েছে, ইইউর টিম রয়েছে। এ ছাড়া আরও অনেক পর্যবেক্ষক আসবে। আমরা আশা করছি, উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে।
নির্বাচন পরবর্তী সময়ে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরা এখন মনোযোগ দিচ্ছি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যেন করতে পারি। সেজন্য কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে পারব। যুক্তরাষ্ট্রের দিকে থেকে নির্বাচনে কেউ বাধা দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে। যেহেতু আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করব, সেই ভয় থাকছে না। এখন আমাদের ফোকাস হলো, ৭ জানুয়ারি যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়। তারপরও যদি কোনো সমস্যা হয়, সেটা আমরা তুলব।
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বন্দ্বে না জড়ানোর প্রসঙ্গ টানেন মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে মিয়ানমার যখন রোহিঙ্গাদের পাঠাল তখন নানা রকমের উসকানি ছিল। কিন্তু আমাদের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকে বলা হয়েছে, কোনো দ্বন্দ্বে না জড়াতে। কোনো কিছুতে জড়াইনি। কারণ, আমরা কোনো দ্বন্দ্ব চাই না।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বাংলাদেশ আমাদের যে ভূমি, আমাদের যে ল্যান্ড বা সয়েল, সেটি আমরা কখনো ব্যবহার করতে দেব না, সেটা যদি আমাদের প্রতিবেশী, অন্য কারও বিরুদ্ধে যায় অথবা অন্য কারো স্বার্থ উদ্ধার হয়। এ বিষয়ে আমরা ক্লিয়ার। আমরা সব ধরনের যুদ্ধের বিপক্ষে।