জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে শুক্রবার ভাষণ দেওয়ার জন্য যখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মঞ্চে উঠলেন, তখন পরিষদ কক্ষে রীতিমতো হট্টগোল শুরু হয়ে গিয়েছিল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে অধিবেশনের সভাপতিকে চিৎকার করতে বলতে হয়েছে ‘অর্ডার, অর্ডার।’
অনেক দেশের প্রতিনিধি, ডেলিগেট, কূটনীতিক তখন নেতানিয়াহুকে ধিক্কার জানাতে দর্শক সারি থেকে চিৎকার করতে করতে উঠে পড়েন। একই সময় ইসরায়েলের সমর্থকরা উল্লাস ধ্বনি দিতে থাকেন। দুপক্ষের হট্টগোলে অধিবেশন নির্বিঘ্ন করতে হস্তক্ষেপ করেন সভাপতি। তিনি চিৎকার করতে বারণ করে বলেন, ‘অর্ডার, অর্ডার’।
এ সময় নিরাপত্তাকর্মীদের দর্শক সারিতে প্রবেশ করতে দেখা যায়। তারা ক্ষুব্ধ কূটনীতিক ও শ্রোতাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। অনেকে ওয়াকআউট করে বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর হট্টগোল থামলে নেতানিয়াহু ভাষণ শুরু করেন। তিনি যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন তখন দর্শকসারি প্রায় খালি। তবে তার ভাষণকালে ইসরায়েল সমর্থকরা ক্ষণে ক্ষণে হর্ষধ্বনি ও হাততালি দিচ্ছিলেন।
নেতানিয়াহু ভাষণ দানকালে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, তিনি মূলত এই বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে না আসার ইচ্ছা করেছিলেন। তবে অন্য বিশ্বনেতাদের দ্বারা তার দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অপবাদ শোনার পর তিনি সিদ্ধান্ত বদলে এসেছেন। তার আসার উদ্দেশ্য সত্য বলা বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাসের আহ্বানের বিরোধিতা করে গাজা ও লেবাননে হামলার স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, আমরা বর্বর শত্রুদের মুখোমুখি হচ্ছি। যারা আমাদের ধ্বংসের চেষ্টা করছে। আমাদের অবশ্যই এই বর্বর খুনিদের বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষা করতে হবে। তারা কেবল আমাদের ধ্বংস করতে চায় তা নয় বরং আমাদের সাধারণ সভ্যতাকেও ধ্বংস করতে চায়। আমাদের সবাইকে অত্যাচার ও সন্ত্রাসের অন্ধকার যুগে ফিরিয়ে দিতে চায়। ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে আমাদের দ্বিতীয় কোনো পথ খোলা নেই। আমাদের জিততেই হবে।
তিনি আরও বলেন, এ হামলা ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজন। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তার দেশ যুদ্ধ করছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর সামাজিক অনুষ্ঠানে বর্বরোচিত হামলা হয়েছে। নেতানিয়াহু সেই হামলার নারকীয় পরিস্থিতি বর্ণনা করেন। বলেন, ইসরায়েল শান্তি চায়। ইসরায়েল শান্তি কামনা করে। ইসরায়েল শান্তি স্থাপন করেছে এবং আবারও শান্তি স্থাপন করবে।