বিএনপির নেতা-কর্মীদের হত্যা-গুমের পেছনে সরকারের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাই গণতন্ত্র ও শান্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কথা বলা এই সরকার প্রধানের মুখে শোভা পায়না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আজ শনিবার (২৪শে সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের শতকরা ৪২ জন মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে। আর তারা (আওয়ামী লীগ) কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছে। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। এ অবস্থার অবসান আজকে তরুণদেরকে ঘটাতে হবে। আজকে তরুণদেরকে জেগে উঠতে হবে, বাংলাদেশের মানুষকে জেগে উঠতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে শাওন, আব্দুর রহিম, নূরে আলমের রক্তকে বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। তাদের রক্তের প্রতি সত্যিকার অর্থে শ্রদ্ধা জানাতে চাই ভালবাসা জানাতে চাই। তাহলে এই ভয়াবহ দানব সরকারকে প্রতিহত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

গুমের কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, গুম হয়ে গেছে আমাদের ছয় শতাধিক মানুষ। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম থেকে শুরু করে আমাদের ছাত্রদলের অসংখ্য ছেলে। এই ছেলেগুলো চলে গেছে মায়ের কুল খালি করে। মা জানে না, বাবা জানে না, কোথায় তারা। আজকে শত শত মানুষকে থানায় নিয়ে গিয়ে পঙ্গু করে দিয়েছে। সহস্রাধিক মানুষকে তারা হত্যা করেছে। এক্সট্রা জুডিসিয়াল কিলিং করেছে। এ কারণে আজকে এলিট ফোর্স র‌্যাব যারা দেশের সুনাম কুড়িয়েছিল অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে। এ সরকারের অন্যায় আদেশ মানতে গিয়ে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা পড়েছে। সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা পড়েছে এটা নিয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। তারাই নির্দেশদাতা, তাদের সবার আগে নিষেধাজ্ঞা আসা প্রয়োজন। নিষেধাজ্ঞা ইতোমধ্যে জনগণ দিয়ে দিয়েছে। মানুষ বলে দিয়েছে তোমাদেরকে আর দরকার নেই।

দেশে উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের কথা খুব বেশি বলতো, এখন একটু কম বলে। উন্নয়ন কখনোই টেকসই হবে না যদি সেখানে গণতন্ত্র না থাকে। আর গণতন্ত্র কখনোই ফলপ্রসু হবে না, যদি সেখানে পাল্টাপাল্টির সিস্টেম না থাকে, এবং মানুষ ভোট দিতে না পারে।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি ছাড়া কোনো ব্যক্তি নেই বাংলাদেশে। এক ব্যক্তির শাসন, এক ব্যক্তির মতবাদ, এক ব্যক্তির সব। কিন্তু এগুলো টিকে না। এ ধরনের কর্তৃত্ববাদ, এ ধরনের ফ্যাসিবাদ কখনোই টিকে না। অন্যায় করে, নির্যাতন করে; ভালোবাসা না থাকলে, প্রেম না থাকলে কখনো কি কাউকে চিরস্থায়ী করা যায়?

স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন রচনা প্রতিযোগিতা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ইউসুফ হায়দারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ডক্টর এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল প্রাক্তন উপ-উপাচার্য আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।