১৮৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নিয়ে একটি নৌকা ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূলে পৌঁছেছে। রোববার স্থানীয় সময়, দুপুর আড়াইটার দিকে আচেহতে এসে পৌঁছায় রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাটি। তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ছিলেন নারী ও শিশু। ঐ অঞ্চলের দুর্যোগ সংস্থার প্রধান রিদওয়ান জামিল রয়টার্সকে এ তথ্য জানান।
রিদওয়ানের শেয়ার করা ছবিতে দেখা যায়, শরণার্থীরা দল বেঁধে বসে আছেন। কেউ কেউ বালুর উপর শুয়ে আছেন। গত কয়েক মাসে শত শত রোহিঙ্গা আচেহ পৌঁছেছেন, যার মধ্যে ডিসেম্বরের শেষ দিকে ১৭৪ জনকে নিয়ে উপকূলে ভেসে যাওয়া একটি নৌকাও রয়েছে।
দেশটির স্থানীয় বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন গত বছরের শেষের দিকেও বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে শত শত রোহিঙ্গা ইন্দোনেশিয়ায় পালিয়ে এসেছিলেন।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য এক দশকের মধ্যে ২০২২ সালটি সমুদ্রে সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক বছর বলে মনে করা হচ্ছে।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা। বছরের পর বছর ধরে অনেক রোহিঙ্গা প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে পালিয়ে আসেন। এরমধ্যে বড় সংখ্যক আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে। অনেকে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পালিয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আন্তারা বলেছে, আচেহ প্রদেশের জেলেরা রোন্ডো দ্বীপের কাছে তিনটি নৌকা দেখতে পেয়েছেন। যেগুলো রোহিঙ্গাদের বহন করছিল বলে তাদের সন্দেহ। রোববার যে নৌকাটি উপকূলে পৌঁছেছে সেটি তাদের একটি কিনা তা স্পষ্ট নয়।
প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে জনাকীর্ণ পরিস্থিতিতে বাস করেন, যাদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মারাত্মক দমনপীড়ন থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসেন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, শিবির ছেড়ে রোহিঙ্গাদের চলে যাওয়ার সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণে বেড়ে গেছে। তাদের বৃহত্তর অংশের দেশত্যাগের কারণ কী তা স্পষ্ট নয়। তবে কিছু মানবাধিকারকর্মী বিশ্বাস করেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আশপাশে কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া এর একটি কারণ হতে পারে।