পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীতে যাত্রীবাহি নৌকাডুবির ঘটনায় আজ আরও ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে ওই ঘটনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৫০। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে তল্লাশি আজকের মত সমাপ্ত ঘোষনা করেছে । তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছে প্রায় অর্ধশাতাধিক । নদীর পাড়ে ভিড় করেছেন নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরেও হতাহতদের স্বজনেরা ভিড় করেছেন। স্বজন হারানোর আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ।

রোববার রাতে বন্ধ থাকার পর সোমবার সকাল থেকে আবারও নদীতে উদ্ধার অভিযানে নামে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার হয় ২৫ জনের মরদেহ। নৌকাডুবির ঘটনায় এই পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক মরদেহ উদ্ধার হলো। ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে কতজন যাত্রী ছিল, তার সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনরা প্রশাসনের কাছে ৬৬ জনের তালিকা দিয়েছেন।

এদিকে, স্বজনদের খোঁজে নদীর তীরে ছুটে বেড়াতে দেখা যায় অনেককে। সেখানে নেমে আসে শোকের ছায়া। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে করতোয়া নদীর তীর। কেউ কেউ নৌকা নিয়ে নদীতে খুঁজে বেড়াচ্ছেন প্রিয়জনকে। কারও হাতে নিখোঁজ স্বজনের ছবি, তা নিয়ে নদী তীরের বাসিন্দাদের দেখাচ্ছেন আর বিলাপ করছেন। এছাড়াও হাজার হাজার উৎসুক মানুষের ঢল নেমেছে নদী পাড়ে।

এর আগে, গতকাল রোববার বিকেলে বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আওলিয়া ঘাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, নৌকায় ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী তোলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানাগেছে, মহালয়া উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বোদা উপজেলা সদর, পাঁচপীর, মাড়েয়া ও ব্যাঙহারি এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী অনেকেই নৌকায় করে স্থানীয় বদেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিলেন। কিন্তু অতিরিক্ত যাত্রী থাকায়, আওলিয়ার ঘাট ছেড়ে মাঝ নদীতে পৌঁছার পর, নৌকাটি উল্টে যায়। দুর্ঘটনার পর কেউ কেউ সাঁতরে তীরে আসতে সক্ষম হন। তবে করতোয়ায় ডুবে যান নারী-শিশুসহ অনেকে।

নিখোঁজদের সন্ধানে তাৎক্ষণিক উদ্ধার অভিযানে নামে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। কয়েক ঘন্টার অভিযানের পর রাতে স্থগিত করা হয়। এরপর সোমবার সকালে আবারও অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস।