মিনায় মুসলি­দের জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। ৮ই জিলহজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও বুধবার রাতেই হাজিরা মিনার তাঁবুতে পৌঁছে যান।

হজযাত্রীর সংখ্যা বিবেচনায় সৌদি মুয়ালিমরা আগের রাত থেকেই হজযাত্রীদের তাঁবুর শহর মিনায় নেওয়া শুরু করেন। হজযাত্রীরা বুধবার এশার পর থেকে মক্কার নিজ নিজ আবাসন থেকে ইহরাম বেঁধে মিনায় রওয়ানা হন। মিনায় যাত্রার মধ্য দিয়ে হজ পালনের সূচনা হয়, যা শেষ হবে ১২ জিলহজ শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে।

বৈশ্বিক অতিমারি করোনার পর বুধবার (৬ই জুলাই) থেকে বৃহত্তম পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান সৌদি আরবের পবিত্র মক্কায় কা’বা তওয়াফের মাধ্যমে হজ কার্যক্রম শুরু করেছেন।

পবিত্র মক্কা নগরী এবং আশপাশের এলাকায় পাঁচদিনের বেশী সময়ে নিয়ম অনুযায়ী হজ পালন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। আরাফাত ময়দানে সমবেত হওয়ার মূল অনুষ্ঠানের আগে বৃহস্পতিবার হাজীগণ মসজিদুল হারাম থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মিনায় যাবেন। আরাফাত ময়দানে সমবেত অনুসারীদের সামনে হযরত মোহাম্মদ (সা:) তাঁর বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।

সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ১০ লাখ মুসলিম হজ পালনে মক্কায় সমবেত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮ লাখ ৫০ হাজার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। বাকিরা সৌদি আরবের নাগরিক। করোনার কারণে দুই বছর সীমিত সংখ্যক লোকের হজ পালনের মাধ্যমে বৃহত্তম হজ অনুষ্ঠানের বিরতির পর এবার ১০ লাখ লোক হজ পালনের সুযোগ পেল।

মক্কায় মসজিদুল হারাম চত্বরে স্বর্ণালী হরফ খচিত কালো কাপড়ে আবৃত পবিত্র কাবাগৃহের ‘তওয়াফ’ এবং অল­াহর কাছে ক্ষমা ও দোয়া চাওয়ার মাধ্যমে হজের প্রথম আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। গোটা বিশ্বের মুসলমানরা এই পবিত্র কা’বার দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন।

গত ২০২০ এবং ২০২১ সালের চেয়ে এবারের হজের সমাবেশ অনেক বড় তবে করোনা পূর্ববর্তী স্বাভাবিক হজের চেয়ে ছোট। ২০১৯ সালে হজে প্রায় ২৫ লাখ লোকের সমাবেশ হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মুসলমানরা এই বার্ষিক হজ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিমের জন্য জীবনে একবার হজ পালন করা ইসলামের অবশ্য পালনীয় পাঁচটি স্তম্ভের একটি অন্যতম ভিত্তি।

কিন্তু, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে নাটকীয়ভাবে হজ যাত্রীদের সংখ্যা হ্রাস করতে বাধ্য হয় সৌদি সরকার। ২০২১ সালে সম্পূর্ণ ভ্যাকসিন নেয়া মাত্র ৬০ হাজার সৌদি নাগরিক এবং সৌদিতে বসবাসকারী লোকদের হজ পালনের সুযোগ দেয়া হয়। যা ২০২০ সালের চেয়ে কয়েক হাজার বেশী।